যশোরে আমনের ফলন ভালো হলেও কম দামের কারণে কৃষকের মুখে হাসি নেই। সরকারিভাবে যেখানে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৪০ টাকা দরে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেখানে ফড়িয়ারা দাম বলছে ৫০০-৬০০ টাকা। কৃষকদের দাবি, এ হিসাবেই প্রতি মণ ধানে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে অন্তত ৫০০ টাকা। প্রতি বিঘায় এ লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
বিভিন্ন হাট ঘুরে জানা গেছে, বর্তমানে যশোরে মানভেদে প্রতি মণ আমন ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায়। শার্শার ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, তারা কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে মহাজনদের কাছে বিক্রি করেন। তারা কৃষকদের মণপ্রতি ধানের দাম ৬০০ টাকার বেশি দিচ্ছেন না।
কৃষকরা বলছেন, এত কম দামে ধান বিক্রি করে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তবে লাভবান হচ্ছে মিল মালিক ও আড়তদাররা। শহরতলির সুজলপুরের কৃষক আফজাল বিশ্বাস বলেন, বিঘাপ্রতি ধান আবাদে তার খরচ হয়েছে ১০-১২ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারে এক বিঘা জমিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি করতে পারছেন ৮-৯ হাজার টাকায়। এতে তার ক্ষতি হচ্ছে অন্তত ২-৩ হাজার টাকা।
বাঘারপাড়ার ধলগ্রামের আবুল বিশ্বাস বলেন, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। ফলন ভালো হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম নেই। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। এতে বিঘাপ্রতি তার ৪-৫ হাজার টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। তবে ধান মজুদ করতে পারলে হয়তো লাভ হতো। কিন্তু সে উপায় না থাকায় বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
বর্গাচাষী শুকচান গাজী বলেন, পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও কিছু জমি লিজ নিয়ে আমন আবাদ করেছিলেন। বিক্রি থেকে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লাভ হচ্ছে না।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে যশোরের আট উপজেলায় এবার ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৫ হেক্টর আমন আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১২৫ হেক্টর।
এদিকে জেলায় এখনো সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হয়নি। এ বিষয়ে সদরের কৃষি কর্মকর্তা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, যশোর সদরে অ্যাপের মাধ্যমে ধান ক্রয়ের জন্য ৩৫ হাজার কৃষক নিবন্ধন করেছেন। ১৫ ডিসেম্বরের পর তারা সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে পারবেন।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের উপপরিচালক শেখ এমদাদ হোসেন বলেন, আমন ধানের ফলন