বাংলাদেশ থেকে ওষুধের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে)। চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে প্রতিষ্ঠানটির ওষুধ কারখানা বন্ধ রয়েছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। জিএসকে চলে গেলেও থেকে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন কার্যক্রমের ফলে সৃষ্ট দূষিত বর্জ্য।
জিএসকের কারখানার এসব বর্জ্যের দূষণক্ষমতা ও তেজস্ক্রিয়তা পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হতে সময় লাগতে পারে ৬০ বছরেরও বেশি। এ কারণে এসব দূষিত বর্জ্য (কন্টামিনেটেড সয়েল) কারখানার ভেতরে ভূগর্ভস্থ বিশেষ বাংকারে নিরবচ্ছিন্নভাবে অন্তত ৬০ বছর সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। জিএসকে কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়নও করেছে। কিন্তু কারখানা অধিগ্রহণকারী নতুন প্রতিষ্ঠানকে এ সম্পর্কে জানানোর কোনো দায়দায়িত্ব নিতে রাজি নয় জিএসকে। মূলত জমির মূল্যে যাতে কোনো প্রভাব না পড়ে সেজন্য জিএসকে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি কারখানার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে জানাতে চায় না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
পরিবেশবিদরা বলছেন, ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ও পরিবেশগত বিপর্যয় এড়াতে জিএসকে কর্তৃপক্ষের উচিত বর্জ্য ডাম্পিংয়ের স্থানগুলো চিহ্নিত করে তা নতুন প্রতিষ্ঠানকে অবগত করা এবং সেখানে থাকা বর্জ্য সম্পর্কেও সঠিক তথ্য দেয়া। তা না হলে নতুন প্রতিষ্ঠান যদি ওই সব স্থানে কোনো অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, তখন বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, কন্টামিনেটেড সয়েল বা রাসায়নিকযুক্ত দূষিত মাটি পরিবেশের জন্য খুবই ভয়াবহ। কারণ এ বর্জ্য যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় ডাম্পিং না করা হয়, তাহলে পরিবেশের নানা ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। জিএসকে তাদের কারখানায় উৎপাদনে ভারী রাসায়নিক ব্যবহার করত, যার তেজস্ক্রিয়তা অনেক বেশি হতে পারে। সেজন্য দূষিত বর্জ্য ঠিকমতো ডাম্পিং এবং সীমানা নির্ধারণ করে পরবর্তী প্রতিষ্ঠানকে তা জানিয়ে দেয়া জিএসকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেই সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে এ বর্জ্য সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে না যাওয়া পর্যন্ত ডাম্পিং স্থানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ বা খননকাজ চালানো হবে না।
১৯৪৯ সালে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে)। ১৯৬৭ সালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকায় জিএসকে তাদের নিজস্ব কারখানায় ওষুধ উৎপাদন শুরু করে। পরে এ কারখানায় ওষুধ ছাড়া অন্যান্য পণ্যও উৎপাদন শুরু হয়। দীর্ঘ কয়েক দশকের উৎপাদন কার্যক্রমে ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম,