হংকংয়ের বিক্ষোভের প্রভাব সম্পর্কে নিজস্ব মতামতের কারণে চীনা ব্যাংক থেকে চাকরি হারিয়েছেন এক অর্থনীতিবিদ। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করার কারণে নতুন চাকরি খুঁজছেন হংকংয়ের এক ব্রোকারেজ কর্মী। ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে—এ আশঙ্কায় অধিকাংশ সহকর্মীর সঙ্গে আলাপ করাই এড়িয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন এক বিনিয়োগ ব্যাংকার। খবর: ব্লুমবার্গ
এশিয়ার অন্যতম আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হংকংয়ে ছয় মাসব্যাপী চলমান বিক্ষোভের প্রভাবে এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ নিয়ে বিতর্কে দুই পক্ষেরই কঠোর মতামত থাকায় শহরটির আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোজুড়ে ব্যক্তিগত রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা এতদিন কাজে সামান্যই প্রভাব ফেলত, নতুন তাত্পর্য পেতে শুরু করেছে।
শিল্পসংশ্লিষ্টদের কারো জন্য এ পরিস্থিতি এরই মধ্যে জটিল হয়ে ওঠা ব্যবসা পরিবেশকে আরো কঠিন করে তুলছে। একই সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে হংকংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত চীনা আর্থিক কোম্পানিগুলোতে এ পরিবর্তন আরো তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে। এসব কোম্পানির যেসব কর্মী বিক্ষোভকে সমর্থন দিয়েছেন তারা জানিয়েছেন, যদি তাদের মিছিলে যোগ দেয়া বা গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে সমর্থন করার কথা প্রকাশ পায়, তবে তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
ব্যাংক অব কমিউনিকেশনসের (হংকং) সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ লাও কা চুং সরাসরি তার উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার চুং বলেন, হংকং সম্পর্কে চীন সরকারের বিবরণের সঙ্গে আমার গবেষণা বিরোধপূর্ণ হওয়ার কারণে আমাকে কাজ থেকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে বলে আমার মনে হচ্ছে।
হংকং শহরে অবস্থিত বৈশ্বিক ব্যাংকগুলো স্থানীয় রাজনীতি থেকে নিজেদের সবচেয়ে বেশি দূরে রাখলেও এ পরিস্থিতির আঁচ তারাও এড়াতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ব্যক্তিগত পোস্টের কারণে প্রতিষ্ঠানকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হওয়ার পর আন্দোলনে আরো মনোযোগ দিতে সেপ্টেম্বরে চাকরি ছেড়ে দেন ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং গ্রুপ বিএনপি পারিবাসের এক লিগ্যাল এক্সিকিউটিভ।
মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক সিটি গ্রুপের হংকং কার্যালয়ে এ মুহূর্তে বেশকিছু বেইজিংপন্থী কর্মী নিজেদের গণতন্ত্রপন্থী সহকর্মীকে এড়িয়ে চলছেন। বিষয়সংশ্লিষ্ট কর্মীরা জানান, পুলিশের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কের পর প্রতিষ্ঠানের এক বিনিয়োগ ব্যাংকারকে গ্রেফতারের ভিডিও প্রকাশের পর পরিস্থিতি আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। তবে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই মতামতের পার্থক্য এখনো কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলছে না বলে জোর দিয়েছেন তারা।
জেপি মরগান চেজ অ্যান্ড কোম্পানির মূল ভূখণ্ড চীনের এক কর্মী