দেশের স্বার্থ রক্ষায় নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) যাচ্ছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের উত্তর-রাখাইন প্রদেশে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা’ মামলার শুনানিতে অংশ নিতে চলতি সপ্তাহে সেখানে যাচ্ছেন তিনি। খবর রয়টার্স।
২০১৬ সালে স্টেট কাউন্সেলর হিসেবে অফিস শুরু করার পর তিনি যখন ইউরোপ ও আমেরিকা সফরে যান, তখন তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করা হয়েছিল। প্রায় অর্ধশতক ধরে সেনা শাসনে নিষ্পেষিত দেশটির সর্বশেষ নেত্রী হিসেবে তাকে এ সম্মান দেখানো হয়েছিল। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার শুনানিতে অংশ নিতে এবার উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ সফরে যাচ্ছেন তিনি। এ সফর তার মাহাত্ম্য ম্লান করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া গত মাসে গণহত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। এ মামলা করতে দেশটিকে সহায়তা দিয়েছে অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে দেশটির সরকার। তবে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার্থে চলতি মাসের ১০ তারিখের শুনানিতে অংশ নিতে এ সপ্তাহে সু চি হেগে যাবেন বলে জানিয়েছে তার অফিস।
এদিকে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক সমাজের মতামতে গরমিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র মায়ো নিন্ট। সু চি শুনানিতে অংশ নিয়ে ২০১৭ সালে উত্তর রাখাইন প্রদেশে আসলে কী ঘটেছিল, তা ব্যাখ্যা করবেন বলে জানান তিনি।
সু চির এ রকম সিদ্ধান্ত অনেককে বিস্মিত করেছে। বিতর্কিত এ বিষয়ে নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে তার শুনানিতে অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক মহলে তার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিষয়সংশ্লিষ্ট সু চির দুই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি।
আন্তর্জাতিক পরিসরে সু চির গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তার হেগ সফরের ঘোষণা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির জনগণের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। দেশটির দীর্ঘদিনের সেনা শাসনকে অগ্রাহ্য করে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির আপামর জনসাধারণ। প্রসঙ্গত, সু চি সেনা শাসনের অধীনে ১৫ বছর গৃহবন্দি থাকার পর গত নির্বাচনে জয়লাভের পর মুক্তি পান।
এদিকে সু চির হেগ সফর সম্পর্কে দেশটির আন্তর্জাতিক সংকট গ্রুপের উপদেষ্টা রিচার্ড হরসি বলেন