ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বিতীয় সংস্করণ অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট

প্রকাশ: ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

নয়াদিল্লির সবচেয়ে বৃহৎ পাইকারি বাজারে আগে যেখানে এক দোকানি অন্য দোকানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামত, এবার তারা সম্মিলিতভাবে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নেমেছে। নয়াদিল্লির সদর বাজারের ট্রাফিক সার্কেলে দাঁড়িয়ে তারা অ্যামাজন ফ্লিপকার্টের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলছে। ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবিতে তাদের বিক্ষোভ।

ভারতজুড়ে আয়োজিত ৭০০ বিক্ষোভের একটি হচ্ছে নয়াদিল্লিতে। তারা অ্যামাজন স্থানীয় -কমার্স জায়ান্ট ফ্লিপকার্টের স্বত্বাধিকারী ওয়ালমার্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। গত বুধবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ করে দোকানিরা।

বৈশ্বিক -কমার্স জায়ান্টদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দোকানিদের অভিযোগ, তারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় গৃহীত নতুন নীতিমালা তোয়াক্কা না করে মূল্যযুদ্ধ চালাচ্ছে। ১৩০ কোটি জনসংখ্যার বিশাল বাজারে শক্ত অবস্থান গড়তে ওয়ালমার্ট অ্যামাজনের শত কোটি ডলার বিনিয়োগ দেশটির খুচরা কারবারের ভবিষ্যেক হুমকিতে ফেলেছে।

দিল্লি বিক্ষোভে অংশ নেয়া কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের ন্যাশনাল সেক্রেটারি প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, অ্যামাজন ফ্লিপকার্ট হচ্ছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বিতীয় সংস্করণ। তাদের উদ্দেশ্য শুধু ব্যবসা নয়, বরং বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ পাওয়া। উল্লেখ্য, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্য করতে এসে ২০০ বছরের জন্য ভারতবর্ষকে করায়ত্ত করে নিয়েছিল।

গত অক্টোবরে -কমার্স জায়ান্টদের লুণ্ঠনমূলক মূল্য নির্ধারণের ব্যাপারে তদন্ত চালুর ঘোষণা দিয়েছিল ভারত সরকার।

গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে ব্লুমবার্গ নিউজকে অ্যামাজন ওয়ালমার্ট জানিয়েছিল তারা ভারতের আইন মেনেই এখানে ব্যবসা করছে এবং তারা কেবল তৃতীয় পক্ষ হয়ে এখানে পণ্য বিক্রি করছে।

ভারতের সাত কোটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনটি ভারতের প্রায় ৯০ শতাংশ খুচরা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে। নিজেদের একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবেও উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির এই গুরুত্বপূর্ণ ভোট ব্যাংকটি।

রকম ইউনিয়নগুলোর শক্তিকে সমীহ করার কারণেই বিদেশী রিটেইলার প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বড় আকারের বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল মোদি সরকার। ন্যূনতম ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগসহ স্থানীয় পণ্য বিক্রি করতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়।

গত বছর বিদেশী -কমার্স জায়ান্টদের বিরুদ্ধে বড় একটি বিজয় ছিনিয়ে আনে। প্লাটফর্মগুলো কীভাবে পণ্য বিক্রি করবে সে ব্যাপারে সরকারি নীতিমালা কঠোর করে। পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে যাতে সমপ্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশ থাকে সে লক্ষ্যে ওই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল। এতে নিজেদের ভার্চুয়াল শেলফ থেকে হাজারো পণ্য সরিয়ে ফেলতে হয় অ্যামাজন ফ্লিপকার্টকে। একই সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসা কার্যক্রমে বড় আকারের পুনর্গঠন তত্পরতা চালু করতে হয়। ওয়ালমার্ট কর্তৃক ফ্লিপকার্টের অধিগ্রহণের পর পরই ওই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছিল।

চীন থেকে অ্যামাজনের সরে আসা এবং যুক্তরাষ্ট্রে -কমার্সে

ওয়ালমার্টের মিশ্র পারফরম্যান্সে ভারতে তাদের বৃহৎ বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। উল্লেখ্য, ভারতের বাজারে শক্ত অবস্থান গ্রহণের লক্ষ্যে ৫৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন অ্যামাজনের প্রধান জেফ বেজোস। অন্যদিকে ফ্লিপকার্ট কিনতে হাজার ৬০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে ওয়ালমার্ট, যা রিটেইলার প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে ব্যয়বহুল অধিগ্রহণ।

দোকানিদের অভিযোগ, আগ্রাসী দাম বিশাল ডিসকাউন্টিংয়ের মাধ্যমে আইনের ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। ঠিকভাবে আইন মেনে না চললে সরকারের কাছে সেগুলো বন্ধের দাবি তুলেছে দোকানিরা।

গত দীপাবলিতে দোকানি -কমার্স জায়ান্টদের মধ্যে তিক্ততা চরমে ওঠে। গত অক্টোবরে এমন সময় দীপাবলি উদযাপিত হলো, যখন ভোক্তা ব্যয়ে শ্লথগতির জেরে গাড়ি নির্মাতা থেকে শুরু করে শ্যাম্পু বিক্রেতাদের ব্যবসায় শ্লথগতি দেখা দিয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রিসমাসের সঙ্গে তুলনীয় দীপাবলি উৎসবে কিছু কিছু দোকানির বিক্রি<


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫