বাল্যবিবাহ ঠেকানোর স্বীকৃতি

ফারাজ হোসেন সাহসিকতা পুরস্কার পেলেন ফরিদা ইয়াসমিন

প্রকাশ: ডিসেম্বর ০২, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাল্যবিবাহ ঠেকানোর স্বীকৃতি হিসেবে ফারাজ হোসেন সাহসিকতা পুরস্কার-২০১৯ পেয়েছেন নেত্রকোনার বারহাট্টার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াসমিন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত। গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নৃশংসভাবে নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের নামে প্রবর্তন করেছে পেপসিকো গ্লোবাল পুরস্কারটি। বন্ধু বা সহকর্মীর প্রতি সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত হিসেবে কোনো ব্যক্তির অনন্য সাহসিকতার স্বীকৃতিতে প্রবর্তিত পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ২০১৬ সাল থেকে।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফরিদা ইয়াসমিনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পেপসিকো ইন্ডিয়া রিজিয়নের প্রধান আহমেদ আল শেখ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। সময় ফারাজের মা সিমিন হোসেনও উপস্থিত ছিলেন। পুরস্কার হিসেবে স্বীকৃতি সনদের পাশাপাশি দেয়া হয় ১০ হাজার ডলার।

এবারের ফারাজ হোসেন সাহসিকতা পুরস্কার পাওয়া ফরিদা ইয়াসমিন ২০১৭ সালের মে মাসে বারহাট্টা উপজেলায় ইউএনও পদে যোগ দেন। সেখানে বাল্যবিবাহের কোনো খবর পেলেই তা বন্ধের জন্য ছুটে যেতেন তিনি। গত এক বছর আট মাসে তিনি ৫৯টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন। এর মধ্যে চারজন ছিল অসচ্ছল পরিবারের সদস্য। তারা নিরুপায় হয়ে পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছিল। ফরিদা ইয়াসমিন নিজের খরচে ওই চার মেয়ের পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

ফরিদা ইয়াসমিনের জন্ম জামালপুরে। বাবা ফজলুল হক চৌধুরী মা খালেদা বেগম। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। স্বামী জামিল আহম্মেদ ময়মনসিংহ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। আরিজ নামে তিন বছরের ছেলেকে নিয়েই ওই দম্পতির সংসার।

পুরস্কার পাওয়ার পর বারহাট্টা উপজেলার মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, প্রজাতন্ত্রের একজন ক্ষুদ্র কর্মীকে সম্মান দেয়ার জন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ সব কাজে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য বারহাট্টার সর্বস্তরের জনসাধারণকে ধন্যবাদ। আশা করি আগামীতেও এভাবে সবাইকে পাশে পাব। আমার কাছে এই পুরস্কার নোবেলের মতো। সময় তিনি আগামীতে সততা ন্যায়ের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করার পাশাপাশি আজীবন নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করার প্রতিজ্ঞা করেন।

ফারাজের মা সিমিন হোসেন বলেন, আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে পেপসিকোকে ধন্যবাদ জনাতে চাই। ২০১৬ সাল থেকে ২০ বছর পেপসিকো আয়োজনের সঙ্গে থাকার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের আয়োজন। আমি মনে করি, ফারাজ বাংলাদেশর তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাহসিতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমাদের পরিবারের পাশে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।

পেপসিকো ইন্ডিয়া রিজিয়নের প্রধান বলেন, আমি ফারাজকে কখনো দেখিনি। কিন্তু আমি তার দ্বারা অনুপ্রাণিত। ফারাজ শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের জন্য উদাহরণ। পেপসিকো ট্রান্সকম একটা পরিবারের মতো। আমরা আয়োজনের সঙ্গে থাকতে পেরে গর্বিত।

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আমার মনে হয় পৃথিবীতে সাহসী তারাই, যারা তাদের সামনে কোনো গর্ত দেখে না। আসলে যারা প্রকৃত সাহসী তারা অন্ধ, তারা সবকিছু দেখতে পায়

সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫