ইরাকের রাজধানী বাগদাদের নাসিরিয়ায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছে আরো ১৫২ জন। দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
বুধবার রাতে নাজাফে ইরানি দূতাবাসে অগ্নিসংযোগের পর নাসিরিয়ায় এ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। নাসিরিয়ায় নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হতেই নিরাপত্তা বাহিনী তৎপর হয়। বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখলে নিরাপত্তা বাহিনীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এতে কমপক্ষে ২৯ জন নিহত হয়। এছাড়া নাফাজে ১২ জন গুলিতে নিহত হয়েছেন।এদিকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ইরাক শহর নাজাফ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের রুখতে সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতি পাঠানো হয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আদেল আবদেল মাহদির নির্দেশে কয়েক কমান্ডারকে এই মিশনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার রাতে অগ্নিসংযোগের পর নিরাপত্তা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এর দায়িত্ব নিয়ে নেন। বিক্ষোভকারীরা ক'দিন ধরে যে জায়গাটা নিজেদের কবজায় রেখেছিল, তাদের সরাতে গিয়ে সংঘর্ষের সময় গুলি চালানো হয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। নাসিরিয়া এখন নিরাপত্তা বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ রাস্তা ও অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছে। ইরাকের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা মূলত রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশেই বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে। গত অক্টোবরে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৬০ জনেরও বেশি। আহত হয়েছে প্রায় দেড় হাজার।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশিরভাগ আবার ইরাকের ওপর ইরানি প্রভাব বিস্তারেরও বিরোধিতা করে আসছে। ইরানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ইরাকিরা হস্তক্ষেপ করে আসছে বলে তাদের অভিযোগ। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সাদ্দাম হোসেনের পতন হওয়ার পর থেকে দেশটিতে ইরানবিরোধী মনোভাব বাড়তে শুরু করেছে। চলতি মাসে কারবালায়ও ইরানি দূতাবাসে হামলা চালানো হয়। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চারজন নিহত হয়েছিল।
সূত্র, দ্য গার্ডিয়ান।