নিরীক্ষা দাবির অর্থ

গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ

প্রকাশ: নভেম্বর ২৫, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিরীক্ষা দাবির পাওনা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা আগামী তিন মাসের মধ্যে পরিশোধে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশে বলা হয়েছে, তিন মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাতিল হয়ে যাবে। আপিল বিভাগের এ আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করতে পারবে গ্রামীণফোন। আগামী এক মাসের মধ্যে এ রিভিউ করতে হবে।

আদালতে বিটিআরসির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন মাহবুবে আলম ও খন্দকার রেজা--রাকিব। আর গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন শেখ ফজলে নূর তাপস, এএম আমিন উদ্দিন, আইনজীবী মেহেদী হাসান চৌধুরী, শরীফ ভূঁইয়া ও তানিম হোসেইন শাওন।

বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা--রাকিব জানান, আপিল বিভাগ বিটিআরসির পাওনা অর্থের মধ্য থেকে অবিলম্বে গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন। তা না হলে এ অর্থ পরিশোধের ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে বলে আদালত জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে গ্রামীণফোন জানিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধসাপেক্ষে বিটিআরসির ওপর হাইকোর্টের দেয়া বর্তমান নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে বলে আপিল বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করার জন্য আমরা আদালতের লিখিত আদেশের জন্য অপেক্ষা করছি। সম্মানিত আইসিটি উপদেষ্টা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নিরীক্ষা-সংক্রান্ত বিরোধ সমাধানের বিষয়ে আমরা আমাদের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করতে চাই।

বিবৃতিতে গ্রামীণফোন আরো বলেছে, বিটিআরসির ওপর মাননীয় হাইকোর্টের দেয়া নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে এবং ত্রুটিপূর্ণ অডিট রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনের ওপর কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। আমরা আশা করছি, আদালতের ওপর আস্থা রেখে বিটিআরসি হাইকোর্টের দেয়া নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবে এবং গ্রামীণফোনকে পরিকল্পিত নেটওয়ার্ক সম্প্র্রসারণ ও গ্রাহকদের সেবা প্রদানে বাধা প্রদান করবে না।

এর আগে ১৪ নভেম্বর গ্রামীণফোন শর্তসাপেক্ষে ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে রাজি বলে প্রতিষ্ঠানটির আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছিলেন। ওইদিন পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছিল ১৮ নভেম্বর। তবে এরপর ২৪ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য করা হয়।

বিটিআরসির দাবি অনুযায়ী, নিরীক্ষা আপত্তিতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ও  রবি আজিয়াটার কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে সরকারের। গত এপ্রিলে পাওনা অর্থ দাবি করে গ্রামীণফোন ও রবিকে নোটিস পাঠায় বিটিআরসি। পরবর্তী সময়ে অপারেটর দুটির এনওসি প্রদান বন্ধ করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।  

 

পাওনা অর্থ আদায়ে দুই সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির লাইসেন্স কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর অপারেটর দুটিকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। এর আগেই ঢাকার দেওয়ানি আদালতে আলাদা আলাদাভাবে দুটি মামলা করে গ্রামীণফোন ও রবি। গত ২৫ আগস্ট মামলা করে রবি। আর গ্রামীণফোন মামলা করে ২৬ আগস্ট।

এমন পরিস্থিতিতে বিরোধ মীমাংসায় টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, বিটিআরসি ও অপারেটর দুটির কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে এতেও সংকটের সুরাহা না হওয়ায় প্রশাসক নিয়োগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে বিটিআরসি। এরই মধ্যে প্রশাসক নিয়োগে অনুমোদনও দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫