আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠেই
টেস্ট হার। এরপর সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে ছাড়াই ভারত সফর। বাংলাদেশ দলকে
ঘিরে তাই বড় কোনো প্রত্যাশাও ছিল না। তবে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ যেভাবে হেরেছে, এমন
ভরাডুবিও হয়তো কারো কল্পনায় ছিল না। দুই টেস্টের কোনোটাতেই লড়াই দূরে থাক, ন্যূনতম
আত্মবিশ্বাসও প্রদর্শন করতে পারেননি মুমিনুল হকরা। ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষাও ছিল
দৃষ্টিকটু। যেন হারার আগেই ম্যাচ হেরে বসেছে তারা। দুই ম্যাচে এমন ভরাডুবির পর
মুমিনুলের কণ্ঠেও শোনা গেল মানসিকতায় উন্নতি আনার কথা। পাশাপাশি ভুল থেকে শিক্ষা
নেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
লড়াইবিহীন আত্মসমপর্ণের পর সংবাদ
সম্মেলনে মুমিনুল বলেন, ‘আমাদের সবার মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়া জরুরি। আশা করি, আমরা
মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে পারব এবং প্রতিদিন একটু একটু করে উন্নতি হবে। আমাদের
সবারই একটু সময় দরকার। তরুণ ব্যাটসম্যানদের উদ্দেশে বার্তা থাকবে এ সিরিজ থেকে
শিক্ষা নেয়ার। যার ফল ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে।’
প্রতিবার হারের পরই অবশ্য শোনা যায়
শিক্ষা নেয়ার কথা। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। এ
প্রসঙ্গে মুমিনুলের উত্তরটা অবশ্য বেশ স্পষ্ট, ‘এ সিরিজ থেকে
তারা যদি শিক্ষা নিতে পারে,
তবে তা পরবর্তী সিরিজে দেখতে পাবেন। যদি শিক্ষা
নিতে না পারে, তাহলে দেখতে পাবেন না। যখন খেলবে মনোযোগ দিয়ে এবং শক্ত মানসিকতা নিয়ে
খেলাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
মানসিকভাবে শক্তি অর্জন করার কথা
বললেও মুমিনুল অবশ্য হারের পেছনে কোনো অজুহাত দিতে চান না। তিনি বলেন, ‘একজন
পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে এখানে অজুহাত দেয়ার কোনো মানে হয় না। মানে আমি কোনো
অজুহাত দিচ্ছি না যে এটার কারণে এটা হয়নি। পরাজিতরা অজুহাত দেয়, তবে
আমি দিচ্ছি না।’
গোটা সিরিজে দল হিসেবে খেলতে পারেনি
বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টে বোলাররা একটু ভালো করলেও ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স
ছিল বেশ হতাশাজনক। মুমিনুলের কাঠগড়ায় প্রধান আসামিও তাই ব্যাটসম্যানরা, ‘আমরা
দল হিসেবে ভালো খেলতে পারিনি,
এমনকি একটি জুটিও গড়তে পারিনি। আপনারা দেখবেন যে
রিয়াদ ও মুশফিক ভাই কাল বেশ ভালো একটি জুটি গড়েছিল। এভাবে ছোটভাবে যদি জুটি হতো, তাহলে
হয়তো আমরা লুফে নিতে পারতাম ব্যাপারগুলো। আমরা খুব বাজে ব্যাটিং করেছি।’
সামনে বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে
অনেকগুলো টেস্ট ম্যাচ। বিশেষ করে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে ম্যাচগুলোর গুরুত্বও
এখন অনেক বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় উন্নতির অনেক জায়গা দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘উন্নতির
জন্য অনেকগুলো জায়গা রয়েছে। যদি উন্নতি করতে পারি, তবে তা আগামী বছর আমাদের কাজে দেবে।
২০২০ সালে আমাদের সামনে প্রায় ১০টি টেস্ট আছে। আপনারা জানেন আমাদের অনেক বেশি
টেস্ট খেলা হয় না। কিন্তু আমরা আগামী বছর ১০টি টেস্ট খেলব। আশা করি আমরা উন্নতি
দেখাতে পারব।’
টস জিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং নেয়ার
সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এ প্রসঙ্গে
মুমিনুল বলেন, ‘দেখুন, আমি তো সামনাসামনি ছিলাম না। আপনাদের যেহেতু বলেছেন, সেই
হিসেবে আমার মন্তব্য করা ঠিক না। আমার মনে হয় না, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আমি সঠিক
ব্যক্তি।’
পাশাপাশি নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে
যুক্তিও অবশ্য দেন তিনি, ‘টস জিতে আমরা যদি ফিল্ডিং করতাম,
ওরা ঠিকই
(বড় ইনিংস খেলত)। পরে আমাদের ওই একই চ্যালেঞ্জের কিন্তু মুখোমুখি হতে হতো। লাল বলের
চেয়ে নতুন গোলাপি বলে কিন্তু চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। যখন শিশির পড়ে, বল
ভেজে, তখন এর মুভমেন্ট অনেক কমে আসে।’