জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য বিস্তারের অন্যতম সহায়ক হলো শেল (পাথরের ভাঁজে থাকা জ্বালানি তেল) অয়েল। কয়েক বছর ধরে দেশটিতে শেলের উত্তোলন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে দেশটি শেল উত্তোলনে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ)। সংস্থাটির প্রাক্কলন প্রতিবেদন বলছে, এ সময় দেশটিতে শেলের দৈনিক উত্তোলন ৪৯ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে ৯১ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে। খবর রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইস ডটকম।
ইআইএ তাদের প্রতিবেদনে বলছে, ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে শেল উত্তোলনের প্রধান সাতটি কেন্দ্রের গড় উত্তোলন বাড়বে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তোলন হবে পারমিয়ান বেসিন অব টেক্সাস ও নিউ মেক্সিকো কেন্দ্র থেকে। এ দুটি শেলক্ষেত্র থেকে দৈনিক উত্তোলন ৫৭ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি পাবে। ফলে এ দুটি কেন্দ্রের দৈনিক উত্তোলন দাঁড়াবে ৪৭ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে। এছাড়া নর্থ ডাকোটা ও মন্তানা বাকেন এলাকার কেন্দ্রে দৈনিক উত্তোলন ৯ হাজার ব্যারেল বেড়ে দাঁড়াবে ১৫ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে। তবে এসব শেলকেন্দ্রে উত্তোলন বৃদ্ধি পেলেও অন্যান্য কেন্দ্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উত্তোলন কমে যাবে বলে জানিয়েছেন ইআইএ।
এর মধ্যে আনাদারকো ও ইগল ফোর্ড এলাকার কেন্দ্র থেকে শেলের দৈনিক উত্তোলন যথাক্রমে ১২ হাজার ও ১৪ হাজার ব্যারেল কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে ইআইএ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেল বেসিন থেকে ডিসেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন হতে পারে বলে মনে করছে মার্কিন সংস্থাটি। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ সময় এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাসের দৈনিক উত্তোলন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াতে পারে ৮ কোটি ৫২ লাখ ঘনফুটে। নভেম্বরে করা প্রাক্কলনের তুলনায় যা দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। তবে জানুয়ারির পর এটাই সর্বোচ্চ উৎপাদন। সে সময় শেল বেসিন থেকে গ্যাসের উত্তোলন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যায়।
প্রধান শেল বেসিনের মধ্যে আপালাসিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র থেকে গ্যাসের উত্তোলন নভেম্বরের তুলনায় দশমিক ১ শতাংশ বাড়তে পারে। এ সময় এ কেন্দ্র থেকে মোট ৩ কোটি ৩৭ লাখ কোটি ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন হয়েছে।
শেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের পাশাপাশি কয়লা উৎপাদনেরও পূর্বাভাস দিয়েছে ইআইএ। প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্কলন অনুযায়ী চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৬৯ কোটি ৭৯ লাখ স্টোন (১ স্টোন সমান ১৪ পাউন্ড) কয়লা উৎপাদন হতে পারে, যা আগের প্রাক্কলনের তুলনায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে গত বছর দেশটিতে সব মিলিয়ে ৭৫ কোটি ৩৭ লাখ স্টোন কয়লা উৎপাদন হয়েছিল। সে হিসাবে চলতি বছর উৎপাদন কমতে পারে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।