দ্বৈত মুদ্রার কার্ড ব্যবহারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়ম

আন্তর্জাতিক লেনদেনকে বাধাগ্রস্ত করবে

প্রকাশ: নভেম্বর ২০, ২০১৯

আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে সারা বিশ্ব এখন একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসে এখন যেকোনো প্রান্তের খোঁজখবরই শুধু মেলে না, পণ্য সেবাও পাওয়া যায়। শুধু তা- নয়, বিদেশ ভ্রমণে আগের মতো সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থ নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনও পড়ে না। এসব বিষয়কে সহজ করেছে আর্থিক খাতের কিছু পণ্য। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো, দ্বৈত মুদ্রার কার্ড। কিন্তু সম্প্রতি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধের নামে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্ড ব্যবহারের নিয়মে কিছু পরিবর্তন এনেছে, যা আলোচ্য বিনিময়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, বিদেশ থেকে পণ্য বা সেবা গ্রহণের জন্য ইন্টারন্যাশনাল কার্ড গ্রাহককে অনলাইন ট্রানজেকশন অথরাইজেশন ফরম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দিতে হবে। যাচাই শেষে ব্যাংক অনুমোদন দিলেই কেবল গ্রাহক অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। এতে নতুন বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে দ্বৈত মুদ্রার কার্ড ব্যবহারকারীদের। এটি সংকট বাড়াবে ব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল কার্ড বিপণনে, দেশের -মানি সম্প্রসারণের পথও রুদ্ধ করবে।

উন্মুক্ত অর্থনীতির স্বাভাবিক শর্ত অবাধ নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে মুদ্রাপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার নীতি নেয়া হলে বাজারের পতন ঘটতে পারে। সাধারণ নীতি প্রণয়ন করা হয় বাজারের স্বাভাবিক প্রবাহ আরো গতিশীল মসৃণ করার জন্য। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে কোন নীতি বাজারের পক্ষে আর কোনটি বিপক্ষে যায়, তা কীভাবে নির্ধারণ করা যাবে। এটি খুব সাধারণভাবেই বোঝা যায়। নীতি গ্রহণের ফলে যদি প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে আরো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় বা অধিক সময় লাগে, তবে নীতিটি মোটেই অর্থনীতি বা গ্রাহক সহায়ক নয়। দেখার বিষয় হলো, নীতি গ্রহণের ফলে প্রাপ্ত সুবিধা কি এর ব্যয় থেকে বেশি, না কম। যদি কম হয়, তবে অবশ্যই নীতিটি অর্থনীতি সহায়ক নয়। দ্বৈত মুদ্রার কার্ডের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি আন্তর্জাতিক লেনদেনকে বাধাগ্রস্ত করবে, যা অর্থনীতির গতিকে স্থবির করবে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি গ্রাহক দ্বৈত মুদ্রার কার্ড ব্যবহার করেন, যা বৈশ্বিক গড় থেকে অনেক কম। কর ফাঁকি রোধ, চুরি বন্ধ, আর্থিক অপরাধ কমিয়ে আনতে বিশেষজ্ঞরা যেখানে ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন বাড়ানো বিশেষত ব্যয় কমিয়ে আনতে অনলাইন লেনদেনকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছে, সেখানে প্রতিবন্ধকতা কেন তৈরি করা হচ্ছে, তা বোধগম্য নয়। নিয়মের ফলে দেশে কার্ডের বাজার সংকুচিত হয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

২০০০ সালের পর থেকে বাংলাদেশে -কমার্স সাইটের প্রবৃদ্ধি লক্ষ করা যায়। ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে গ্রাহক এখন ঘরে বসে চীন বা আমেরিকা অথবা ইউরোপে উৎপাদিত একটি পণ্য সহজেই পাচ্ছে। মাধ্যমটি জনপ্রিয় করার পেছনে কিন্তু বড় ভূমিকা রেখেছে দ্বৈত মুদ্রার কার্ড, যা ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিয়ে আসছে। প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের -কমার্স মার্কেট বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি ঘোষণায় শঙ্কার মধ্যে পড়ে গেছে। এমনিতেই সংশ্লিষ্ট খাতটি নানা অবকাঠামো প্রতিকূলতার মধ্যে টিকে রয়েছে। এখন যদি আন্তর্জাতিক পণ্য বিক্রি বন্ধ বা সংকুচিত হয়ে যায়, তবে তারা বিপুল লোকসানের সম্মুখীন হবে, যা কাম্য হতে পারে না।

অনলাইনের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের জন্য ২০১১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রবিধান তৈরি করে, যার আওতায় ডিজিটাল ওয়ালেট, স্মার্টকার্ড, সেলফোনের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত রয়েছে। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ছিল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি লেনদেন সহজ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সৃষ্ট


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫