দেশের সংরক্ষিত বনভূমির বড় একটি অংশই চট্টগ্রামে। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব এবং বন বিভাগের লোকবল সংকটের কারণে এসব বনভূমি থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান ও দুর্লভ প্রজাতির অনেক গাছ। স্থানীয় প্রভাবশালী এবং বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কমচারীর সঙ্গে যোগসাজশে প্রতিনিয়ত বনের বৃক্ষ নিধন করছে কাঠ চোরাকারবারিরা।
চট্টগ্রাম জেলার বনাঞ্চল মূলত তিন ভাগে বিভক্ত—চট্টগ্রাম উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ ও উপকূলীয় বনাঞ্চল। এর মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ১৯টি রেঞ্জে ৩৫টি বিটে সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনভূমির পরিমাণ ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩৭ একর (৫৬ হাজার ৬১৪ হেক্টর)। অন্যদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতায় প্রায় ১৩টি রেঞ্জে সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনভূমির পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ হেক্টর। বাকি বনাঞ্চল উপকূলীয় বন বিভাগের অধীন।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের দুই বন বিভাগেই রক্ষিত, সংরক্ষিত এবং অর্পিত বন বিভাগ থেকে কাঠ পাচারের ঘটনা ঘটছে। বন বিভাগের পর্যাপ্ত লোকবল না থাকার কারণে পাচার হওয়া কাঠ জব্দ করাও সম্ভব হচ্ছে না। বনভূমির পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকা স্থানীয়রা এ কাঠ পাচার কারবারের সঙ্গে জড়িত বেশি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ বছরে চট্টগ্রাম উত্তর বনাঞ্চল থেকে চোরাই পথে আসা প্রায় ৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৬ ঘনফুট কাঠ, ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৬ ঘনফুট জ্বালানি এবং প্রায় ৩২ হাজার পিস বল্লী পাচার হতে যাওয়ার আগেই জব্দ করেছে চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বিভাগের কাছে পূর্ণাঙ্গ কাঠ জব্দের তথ্য না থাকলেও কাঠ ও জ্বালানি মিলে প্রায় ৭ লাখ ঘনফুট কাঠ জব্দ করা হয়েছে। জব্দ হওয়া এ কাঠ পাচার হওয়া কাঠের ক্ষুদ্রাংশ মাত্র।
পাচার হয়ে যাওয়া মূল্যবান গাছের মধ্যে রয়েছে সেগুন, আকাশমণি, জারুল, চাপালিশ, শিশু, গামারি, কড়ই, গর্জন ও জাম। মূলত রাতের আঁধারেই এসব গাছ কেটে পাচার করা হয়ে থাকে।
বন থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ কাঠ পাচার হলেও পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে তা থামানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তারা। তারা বলেন, বনবিভাগের সামান্য লোকবল দিয়ে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। বন বিভাগের রেঞ্জের প্রতিটা বিটে একজন ডেপুটি রেঞ্জার বা ফরেস্টার দায়িত্বে থাকার কথা থাকলেও বন প্রহরী পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে দিয়ে বিটের নিরাপত্তার