সামুদ্রিক প্রলয় রোধে সুন্দরবন রক্ষা জরুরি

প্রকাশ: নভেম্বর ১৬, ২০১৯

ম. ইনামুল হক

সামুদ্রিক প্রলয় বুলবুল প্রায় ১০০ কিলোমিটার দমকা হাওয়ার বেগে নভেম্বর সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের ওপর আছড়ে পড়ে এরপর প্রলয় চব্বিশ পরগনা, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে চলে আসে বলা বাহুল্য, বঙ্গীয় -দ্বীপের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত সুন্দরবন তার গাছপালা দিয়ে সামুদ্রিক প্রলয় বুলবুলকে মোকাবেলা করে এবং দুর্বল করে দেয় সুন্দরবন বারবার আমাদের সামুদ্রিক প্রলয় থেকে রক্ষায় সাহায্য করে চলছে সুন্দরবনকে রক্ষা করা তাই জরুরি বাংলাদেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণে অবস্থিত প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের সুন্দরবন ২৬৯ প্রজাতির বিচিত্র পাখি, ডাঙার প্রাণী, মাছ অন্যান্য জীবের আবাসস্থল এবং ৩৩৪ প্রজাতির বিশেষ গাছপালার বন ১৮৭৫ সালে বাংলাদেশে একে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশে এর স্থলভূমি মোট হাজার ২০০ বর্গকিলোমিটার এবং নদী, খাল খাঁড়ি নিয়ে জলাভূমি মোট হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটার ১৯৭৭ সালে সমুদ্র-তীরবর্তী মোট ৩২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তিনটি বন্য প্রাণী অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয় ১৯৯২ সালে একে রামসার সাইটভুক্ত এবং ১৯৯৭ সালে একে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটসের তালিকাভুক্ত করা হয় সারা বিশ্বে এখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এলাকাগুলো সবচেয়ে মূল্যবান

সারা বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্য সুন্দরবন ধ্বংস করার জন্য নানা মোড়কে নানা তরফ থেকে উদ্যোগ আছে ২০০৯ সালে সুন্দরবন কক্সবাজারকে বিশ্বের সাতটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ক্ষেত্র হিসেবে ভোট দেয়ার যজ্ঞ শুরু হলে একই সঙ্গে যজ্ঞের উদ্যোক্তারা সুন্দরবন আশপাশের এলাকা দখল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এরই এক পর্যায়ে ২০১১ সালে বিআইডব্লিউটিএ মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথটি বন্ধ করে দেয় এরপর খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল যশোর জেলার বিভিন্ন নদীবন্দরে যাতায়াতকারী মালবাহী কার্গো জাহাজগুলো সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে শ্যালা নদীপথে যাতায়াত শুরু করে পশুর নদের তীরে মোংলা সমুদ্রবন্দর অবস্থিত বিধায় সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে সমুদ্রগামী জাহাজ আসা-যাওয়া করে এসব জাহাজ তাদের ব্যবহূত কঠিন বর্জ্য জ্বালানি বর্জ্য ফেলে সুন্দরবন দূষিত করতে থাকে পরিবেশবাদীরা তাই সুন্দরবন রক্ষার জন্য এর ভেতর দিয়ে যাতায়াতকারী জাহাজ বন্ধ এবং রামপাল এলাকায় দুটি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছেন

বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পয়লাহার নদীর ঘষিয়াখালী থেকে রামপাল উপজেলার মোংলা নদীর বেতবুনিয়া পর্যন্ত দশমিক কিলোমিটার সংযোগ খাল খনন করে ১৯৭৩ সালের নভেম্বরে মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌরুটটি চালু করা হয় ২২ কিলোমিটার রুটটি ৪০ বছর ড্রেজিং ছাড়াই চলেছে ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল রামপালের কাছে এমভি তিশা-, এমভি সুমাইয়া সাজিদ অয়েল ট্যাংকার তুষান আড়াআড়িভাবে চরে আটকে গেলে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তখন জরুরি ভিত্তিতে সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে বিকল্প পথ চালু করা হয় এরপর প্রয়োজনীয় ড্রেজিং করে নৌপথটি পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়েছে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথে রামপাল উপজেলার মোংলা নদীর অংশে পলি পড়ে বেশি এর কারণ গত ২০-৩০ বছরে নৌপথের দুই পাশে সংযোগ খালগুলো দখল করে চিংড়িঘের করা হয়েছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোনা পানি প্রতিরোধ প্রকল্প নদীর ভেতরে পলিপাতন ত্বরান্বিত করেছে

ব্রহ্মপুত্র মেঘনার অববাহিকায় বঙ্গীয় সমতল ঘিরে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের চারটি অংশে রয়েছে চারটি বিশেষ ভূতাত্ত্বিক গঠন এবং বাঙালির বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য সমতলের উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত বরেন্দ্র ভূমি বাঙালি সংস্কৃতির আদি পীঠস্থান বাংলার আদিকালের রাজধানী গৌড় পুণ্ড্রনগরীকে কেন্দ্র করে অংশে বাংলার অতীত সভ্যতার নিদর্শন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫