টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে জীবননগর থানার ওসি ও শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত সোমবার বিকালে তাদের প্রত্যাহার করে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন জীবননগর থানার ওসি শেখ গনি মিয়া ও শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাহিদুজ্জামান।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার শাহাপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাহিদুজ্জামান সাইদের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ করেন ওই ক্যাম্পের আনসার সদস্য ফারুক হোসেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের প্রত্যাহার করা হয়।
আনসার সদস্য ফারুক অভিযোগ করে বলেন, গত রোববার সন্ধ্যায় বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা এনে শাহাপুর ক্যাম্পে ভাগ করা হয়। এ সময় জীবননগর থানার ওসি শেখ গনি মিয়াকে ১৫ হাজার, কনস্টেবল মেহেদীকে ৫ হাজার, কনস্টেবল আক্তারকে ৩ হাজার টাকা দিয়ে মোট ৯৫ হাজার টাকা অন্যদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে ক্যাম্পে একটি পিকনিকের আয়োজন করা হয়। মাদক কারবারিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের আইনের আওতায় না এনে ছেড়ে দেয়া হয়। এ বিষয়টি আমি পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।
প্রত্যাহারের বিষয়টি জানাজানির পর শাহাপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাহিদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিইনি। এ ক্যাম্পে দায়িত্ব নিয়েছিলাম মাত্র এক মাস আগে। এ সময়ের মধ্যে যেসব মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছিলাম, তাদের জীবননগর থানায় সোপর্দ করেছি। তবে প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বণিক বার্তাকে জানান, মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগে জীবননগর থানার ওসি শেখ গণি মিয়াকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া তার অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর দায় ওসি এড়াতে পারেন না। এজন্য দুই পুলিশ কর্মকর্তাকেই প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাদকের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত জেলার কোনো পুলিশ সদস্যকেই ছাড় দেয়া হবে না। শুধু মাদকই নয়, বরং পুলিশের বিরুদ্ধে যেকোনো অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।