আদালতের হস্তক্ষেপে নিরীহ রাজনের কারাজীবনের অবসান

প্রকাশ: নভেম্বর ১২, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক

একজনের নাম হাবিবুল্লাহ রাজন, অন্যজন রাজন ভুঁইয়া। দুজনের বাড়িই কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায়। বাবার নামও এক। তবে একজনের বাবা জীবিত, অন্যজনের মৃত। মাদক মামলায় আদালতের পরোয়ানা তামিল করতে গিয়ে পুলিশ হবিবুল্লাহ রাজনের পরিবর্তে নিরীহ রাজন ভুঁইয়াকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। পরে অবশ্য তার আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাকে মুক্তি দিয়েছেন। পাশাপাশি যে পুলিশ কর্মকর্তার ভুলে এই কাজ হয়েছে, তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ আদেশ দেন।

আদেশ অনুযায়ী, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার এসআই মামুনুর রশীদকে আগামী ৪ ডিসেম্বর এ আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নিরীহ রাজন ভুঁইয়ার পরিবারকে কোনো ধরনের হয়রানি না করতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের আদেশে বলা হয়, যাচাই-বাছাই না করে নিরীহ নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যাচাই-বাছাই না করে রাজন ভুঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রাজন ভুঁইয়ার আইনজীবী নিকুঞ্জ বিহারী আচার্য জানান, রাজন ভুঁইয়ার নামে কোনো মামলা ছিল না। পুলিশ তাকে হাবিবুল্লাহ রাজন মনে করে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। আদালতে রাজন ভুঁইয়ার জন্মসনদ, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সনদপত্র জমা দেয়া হয়েছে। জন্মসনদ অনুযায়ী রাজন ভুঁঁইয়ার বয়স এখন ১৯ বছর। অথচ মামলার আসামি হাবিবুল্লাহ রাজনের বয়স তখন ছিল ২৬ বছর।

আদালতে জমা দেয়া রাজন ভুঁইয়ার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, রাজন ভুঁইয়ার বাবার নাম আবদুল মান্নান। আবার প্রকৃত আসামি হাবিবুল্লাহ রাজনের বাবার নামও আবদুল মান্নান। তবে রাজন ভুঁইয়ার বাবা মৃত। আর হাবিবুল্লাহ রাজনের বাবা জীবিত। নিরীহ রাজন ভুঁঁইয়াকে কারাগার থেকে আজ ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত এক টাকা মুচলেকায় তাকে জামিন দেন। আর এই মাদক মামলার আসামি না হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।

এর আগে ২০১২ সালের ৯ মে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে নেশাজাতীয় ২৮ পিস ইনজেকশনসহ হাবিবুল্লাহ রাজন নামে এক আসামি গ্রেফতার হন। তখন তার বয়স ছিল ২৬ বছর। তার বাবার নাম আবদুল মান্নান। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার গোপালনগর গ্রামে। গ্রেফতার হওয়ার ১ মাস ২১ দিন পর আদালতের আদেশে জামিনে মুক্ত হন হাবিবুল্লাহ রাজন। এরপর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। কিন্তু ওই বছরেই বংশাল থানা-পুলিশ তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ওই বছরের ১ জুলাই হাবিবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলাটি তখন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ছিল। ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ বদলি করা হয়। পরে আদালত পলাতক আসামি হাবিবুল্লাহ রাজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫