বাণিজ্য অনিশ্চয়তা ও হংকংয়ের অস্থিরতা

নিম্নমুখী এশিয়ার শেয়ারবাজার

প্রকাশ: নভেম্বর ১২, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়তে দেখা যায়। এদিকে নতুন করে শুরু হওয়া বিক্ষোভের কারণে হংকংয়ের বাজারে তীব্র পতন দেখা গেছে। খবর এএফপি, সিএনবিসি।

বিশ্বের শীর্ষ বৃহৎ অর্থনীতি দুটি একটি প্রাথমিক চুক্তির ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছাবে, এ আশায় গত কয়েক সপ্তাহ ইকুইটি বাজারগুলোয় চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। এছাড়া আলোচনায় অগ্রগতির সুবাদে দুই পক্ষ কিছু শুল্ক প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে, চীনের এমন ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারগুলো আরো চাঙ্গা হয়ে ওঠে। কিন্তু চীনের এ ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কিছু বিভ্রান্তিমূলক আভাস বিনিয়োগকারীদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছানোর কথা অস্বীকার করেছেন।

তবে হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো জানান, ডিসেম্বর থেকে চীনা পণ্যের ওপর যে শুল্কারোপ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, ট্রাম্প তা মুলতবি করতে পারেন। তার এ মন্তব্যের পর ওয়াল স্ট্রিটের অন্যতম দুটি সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও ডাও জোন্স রেকর্ড সর্বোচ্চে দিন শেষ করে।

তবে এশীয় বিনিয়োগকারীরা এ জয়ের ধারা বজায় রাখতে পারেননি। গতকাল মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই টোকিও দশমিক ২ ও সিঙ্গাপুর দশমিক ৪ শতাংশ হারায়। এছাড়া সিউল, তাইপে ও ম্যানিলায়ও পতন দেখা গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি সূচক দশমিক ৪৬ শতাংশ হারায়।

মূল ভূখণ্ড চীনের বাজারগুলোয়ও পতন দেখা গেছে। এর মধ্যে সাংহাই কম্পোজিট ১ দশমিক ২২ ও শেনঝেন কম্পোজিট ১ দশমিক ৬১ শতাংশ হারায়। শেনঝেন কম্পোনেন্ট সূচক হারায় ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

এদিকে হংকংয়ে এক বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পাঁচ মাস ধরে চলমান বিক্ষোভ আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। শহরটির শেয়ারবাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ২ দশমিক ৯১ শতাংশ হারিয়ে ঋণাত্মক টেরিটরিতে নেমে গেছে।

উল্লেখ্য, গতকাল একটি গণবিক্ষোভ কর্মসূচিতে স্থানীয় পুলিশ গুলি চালালে অন্তত এক বিক্ষোভকারী আহত হন। এছাড়া সম্প্রতি গণতন্ত্রপন্থী তিনজন আইনপ্রণেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চলমান বিক্ষোভ এরই মধ্যে এশিয়ার বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শহরটির অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

গতকাল জাপান বাদে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিস্তৃত এমএসসিআই সূচক হারায় দশমিক ৯১ শতাংশ।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য উত্তেজনা চলতি সপ্তাহে মুদ্রা বাজার অস্থিতিশীল রাখতে পারে বলে গতকাল সকালে এক নোটে কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার কারেন্সি স্ট্র্যাটেজিস্টরা জানিয়েছেন। তারা বলেন, চলতি সপ্তাহে ডলার আরো শক্তিশালী হতে পারে। ফলে ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা আরো হ্রাস পেতে পারে।

সিটি গ্রুপের বিশ্লেষকরা জানান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ফেজ ওয়ান চুক্তি অর্জন সেপ্টেম্বরের শুল্ক প্রত্যাহারের পাশাপাশি ডিসেম্বরের সম্ভাব্য শুল্কারোপ মুলতবি করার ওপর নির্ভর করছে। উল্লেখ্য, ১৫ ডিসেম্বর থেকে আরেক দফা শুল্ক বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।

তবে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও বড় ধরনের অনিশ্চয়তা বহাল থাকবে বলে মনে করছেন তারা। এর কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলেন, শুল্ক বাতিল হলেও বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে বিনিয়োগসংক্রান্ত ও আর্থিক বিরোধ অব্যাহত থাকারই আশঙ্কা রয়েছে।

মুদ্রাবাজারের ক্ষেত্রে গতকাল ছয়টি প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান অপরিবর্তিত থাকতে দেখা যায়।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫