১ দশমিক ৭০ ট্রিলিয়ন ডলার

কতটা ন্যায্য সৌদি আরামকোর ভ্যালুয়েশন?

প্রকাশ: নভেম্বর ১০, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপকরা মনে করছেন সৌদি আরামকোর যে ভ্যালুয়েশন হয়েছে, তা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বা আইপিও ছাড়ার প্রস্তুতি হিসেবে আরামকোর ভ্যালুয়েশন ট্রিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে দশমিক ৭০ ট্রিলিয়ন ডলার করা হলেও অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন আসলে বেশি ছাড় দেননি সৌদি যুবরাজ। খবর ব্লুমবার্গ।

অলিয়সেঁ বার্নস্টেইন ফ্রাংকফুর্টভিত্তিক ইউনিয়ন ইনভেস্টমেন্ট প্রাইভেটফন্ডসের মতো আর্থিক ব্যবস্থাপকরা মনে করছে, জ্বালানি জায়ান্টটির মূল্য দশমিক ৭০ ট্রিলিয়ন ডলারের চেয়ে কম। সৌদি কর্তৃপক্ষ যে মাত্র শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছে, সে বিষয়ে তারা চিন্তিত। কারণ অল্প পরিমাণ শেয়ারের মাধ্যমে কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের কোনো শক্ত অবস্থান থাকবে না। এছাড়া আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েও ভাবতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। গত সেপ্টেম্বরে কোম্পানিটির কয়েকটি স্থাপনায় ড্রোন হামলা হয়েছে।

আরামকোর বিক্রি হতে যাওয়া আইপিওর বড় ক্রেতা হতে যাচ্ছেন সৌদি চীনা বিনিয়োগকারীরা। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যর্থ হলে রিয়াদে ১১ ডিসেম্বর আইপিও ছাড়তে গেলে বড় ধাক্কা খেতে পারেন ৩৪ বছর বয়সী যুবরাজ। তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো এবং অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য নিয়ে আসার জন্য গৃহীত রূপকল্প ২০৩০-এর জন্য আইপিও ছাড়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরামকোর শেয়ার ক্রয়ে আলোচনা চালানো সৌদি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছেন ওলাইয়ান পরিবার যুবরাজ আলওয়ালিদ বিন তালাল।

অলিয়সে বার্নস্টেইনের নিউইয়র্কভিত্তিক জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক স্লাভা ব্রিউসভ বলেন, যদি আরামকো তাদের উচ্চাভিলাষী ভ্যালুয়েশন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে ফেলে এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশে কোম্পানিটির আইপিও ছাড়ে, তাহলে তা দুর্বলতার চেয়ে সক্ষমতা প্রজ্ঞার নিদর্শন হিসেবে থাকবে। সফল আইপিও হচ্ছে তাই, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থ বানায়। আরামকোর মূল্য দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারের কম বলে মনে করেন ব্রিউসভ।

২০১৭ সালে সৌদি আরবের মোট রাজস্বের ৬০ শতাংশই এসেছে তেল থেকে। ওপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সৌদি আরবের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত কোম্পানিটি বিশ্বের ১০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল উত্তোলন করে। আইপিও থেকে প্রাপ্ত অর্থ রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত অর্থ তহবিল পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে যাবে, যা যুবরাজের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।

অসপ্রেই ম্যানেজমেন্ট নামের হেজ ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ডোয়াইট অ্যান্ডারসন বলেন, সম্পদের মান ব্যাপ্তির দিক থেকে আরামকো বিশ্বসেরা এবং এর সঙ্গে তুলনীয় কেউ নেই। কিন্তু আইপিও ছাড়ার বিষয়টি দেশের স্বার্থ ভেবে করা হয়েছে, প্রতিটি বিনিয়োগকারীর স্বার্থ ভাবা হয়নি।

স্যানফোর্ড সি বার্নস্টেইন অ্যান্ড কোম্পানি মনে করছে লভ্যাংশ আয় পূর্বাভাসের ভিত্তিতে আরামকোর ন্যায্য ভ্যালুয়েশন হতো দশমিক ২০ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন ডলার। লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান টিএস লমবার্ডের বিশ্লেষক মার্কাস চেনেভিক্স বলেন, আমাকে যদি রকম অ্যাসেটসমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনতে হতো, তাহলে তার ভ্যালুয়েশন দশমিক ২০ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে দশমিক ৩০ ট্রিলিয়ন ডলার প্রত্যাশা করতাম। কোম্পানিটি সবচেয়ে উদ্বেগের জায়গা হলো, শেয়ারহোল্ডারদের মূল্য দেয়া বা করপোরেট স্থিতিশীলতা আনা নয়, বরং সৌদি রাষ্ট্রকে তহবিল সরবরাহ করা তার অগ্রাধিকারের জায়গা।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫