[পূর্ব প্রকাশের পর]
গণিত ভাবনা পর্ব ১২: এত জল ও কাজল চোখে পাষাণী আনলে বল কে?
কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ও সুর করা অনেক গানই আমাদের সবার পরিচিত। তার মধ্যে আমার খুব প্রিয় একটা গান ‘এত জল ও কাজল চোখে’। গানটা আমার প্রিয় হওয়ার প্রধান কারণ বাংলাদেশ টিভিতে নজরুলগীতির কিংবদন্তি আঙ্গুরবালা দেবীকে গানটি গাইতে দেখতে পাওয়া।
আঙ্গুরবালার জন্ম ১৯০০ সালের কাছাকাছি কোনো এক সময়ে, মৃত্যু ১৯৮৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি (তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট)। আঙ্গুরবালা নজরুলের গানটা প্রথম রেকর্ড করেছিলেন ১৯২৮ সালে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি এখানে এসেছিলেন। তত্কালীন বিটিভি আঙ্গুরবালার কণ্ঠে এত জল ও কাজল চোখে গানটা প্রচার করেছিল। পরে ’৮০ সালের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে গানটার পুনঃপ্রচার ঘটেছিল। অনুমান করি, আঙ্গুরবালার মৃত্যুর পরই তাকে স্মরণ করে হয়েছিল এ পুনঃপ্রচার। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল সেই পুনঃপ্রচারটা দেখার। আঙ্গুরবালা বাংলাদেশে যখন এসেছিলেন তখন তার বয়স ছিল সত্তরের উপরে। কিন্তু তখনো কী তীব্র কণ্ঠ! আর কোনো অদ্ভুত কারণে গানটা গাওয়ার সময় তিনি কানের পাশে হাত তুলে রেখেছিলেন। পুনঃপ্রচারের সময় আমার বয়স হয়তো ১০-১২ বছর হবে। কিন্তু আঙ্গুরবালার তীব্র কণ্ঠ ও বসে বসে কানে হাত দিয়ে গান গাওয়ার দৃশ্যটা আমার মনে গেঁথে যায়। সেই থেকে এত জল ও কাজল গানটা আমার প্রিয়। আর শুনলেই সেই কানে হাত দিয়ে বসে থাকার দৃশ্যটা মাথায় ভেসে ওঠে।
নজরুল কাকে ভেবে কেন গানটি লিখেছিলেন, আমার জানা নেই। আমাকে মুগ্ধ করলেও গানের সুর, কথা ও কথাভঙ্গিতে নারী না পুরুষ, কাকে নিয়ে গানটা লেখা হয়েছে তাও বুঝে উঠতে পারি না। গানটার কিছু জায়গায় মনে হয় কোনো পুরুষ তরুণ কবিকে উদ্দেশ করেই গানটা লেখা। আবার গানটার কথায় কাজল চোখ, টলমল জলমতির মালা শব্দগুলো শুনলে মনে হয় কোনো এক মেয়েকেই নিয়ে লেখা। আমার স্কুলজীবনের এক বড় ভাই আমাকে জানিয়েছিলেন, গানটা এক নারীকেই নিয়ে লেখা। তবুও আমার মনে হয়, গানটাতে নারী-পুরুষের শোকের মিশ্রণ আছে। যদিও গানটার শোকের রূপ আমার কাছে নারীর শোকের রূপ বলে মনে হয়—যেভাবে নারীর শোককে কবিতা, গানে, নানা