লেবার পার্টি জিতলে ব্রিটেন ছাড়তে দেরি করবেন না শীর্ষ ধনীরা

প্রকাশ: নভেম্বর ০৪, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

আসন্ন ১২ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জেরেমি করবিনের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি জিতলে মুহূর্তে ব্রিটেন ছেড়ে যেতে স্যুটকেস গুছিয়ে রেখেছেন দেশটির শীর্ষ ধনীরা। করবিন প্রধানমন্ত্রী হলে নতুন কর আরোপ, মূলধন নিয়ন্ত্রণ জারি এবং বেসরকারি স্কুলগুলো লেবার সরকারের রোষের মুখে পড়ার আশঙ্কায় কোটি কোটি পাউন্ড হারানোর ভয়ে উদ্বিগ্ন সেখানকার শীর্ষ ধনীরা। খবর গার্ডিয়ান। 

মিলিয়নেয়ার বিলিয়নেয়ার গ্রাহকদের থেকে অজস্র ফোন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের শীর্ষ ধনীদের পরামর্শ সংস্থার আইনজীবী হিসাবরক্ষকরা। গ্রাহকরা ফোন করে দেশ ত্যাগ, বিদেশে সম্পদ পাঠানো নিজেদের সন্তানদের আগেভাগেই উপহার দেয়ার বিষয়ে তাদের থেকে সহায়তা পরামর্শ চেয়েছেন। কেননা লাখ ২৫ হাজার পাউন্ডের বেশি উত্তরাধিকারের ওপর কর আরোপের হুমকি দিয়েছেন লেবার নেতা করবিন। আর ধনীরা সম্ভাব্য নতুন কর এড়াতে চাইছেন। দেশটির শীর্ষ ধনীরা নিজেদের সম্পদ জীবনমানের প্রতি করবিনের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ব্রেক্সিট বিপর্যয়ের চেয়ে শতাংশ বেশি ভয়ংকর বলে মনে করেন।

এদিকে নিজের অনেক গ্রাহক করবিন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে সম্পদ বিদেশে সরিয়ে নেয়াসংক্রান্ত পরিকল্পনা জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বুদল হ্যাটফিল্ড ফার্মের পার্টনার জেফ্রি টড। তিনি বলেন, শীর্ষ ধনীদের বড় একটা অংশ নিজেদের সম্পদের ওপর উচ্চ করারোপের ভয়ে উদ্বিগ্ন। তারা করবিন সরকারকে মোকাবেলার সম্ভাব্য প্রস্তুতিও সেরে রেখেছেন। অনেক ক্ষেত্রে সম্পদ স্থানান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও সম্পন্ন করে রেখেছেন, যাদের চুক্তিপত্রে খালি সই করাটাই বাকি।

হ্যাটফিল্ড ফার্মের পার্টনার বলেন, লেবার জিতলে ১৩ ডিসেম্বরের প্রথম বেলায় শীর্ষ ধনীদের অনেকেই নিজেদের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করবেন। কোন দেশে নতুন কোন মালিকের কাছে মূলধন সরিয়ে নেবে, তার ব্যবস্থা অনেকে সেরে রেখেছেন, শুধু অনুমোদনটাই বাকি।

এদিকে ক্যাম্পডেন ওয়েলথের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডমিনিক স্যামুয়েলসন বলেন, করবিনের অধীন লেবার সরকার ব্রিটেনের শীর্ষ ধনী মহলের জীবনাচার, ব্যবসা সম্পদের জন্য ব্রেক্সিটের চেয়ে অনেক বেশি আতঙ্কজনক। প্রসঙ্গত, ক্যাম্পডেন সাড়ে তিন হাজারের বেশি ধনী পরিবারকে পরামর্শ দেয়।

অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার দেশটির পাঁচএলিটধনীর নাম করেছেন লেবার প্রধান। নিজেরা ক্ষমতায় এলে দেশে পুনর্ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের সম্পদে হাত দিতে পারে লেবার সরকার।

স্পোর্টস ডিরেক্টর নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের কর্ণধার বিলিয়নেয়ার মাইক অ্যাশলেকেবাজে বসবলে মন্তব্য করেন করবিন। জিরো-আওয়ার চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের ওপর শোষণ চালানোর অভিযোগ রয়েছে অ্যাশলের বিরুদ্ধে।বাজে বস’-এর জবাবে অ্যাশলে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, করবিন শুধু মিথ্যাই বলছেন না, তিনি অনুমাননির্ভর কথা বলছেন, তার কথার কোনো প্রমাণ নেই।

অন্যদিকে হেজ ফান্ডের ম্যানেজার ক্রিসপিন ওদেকেলোভী মুত্সুদ্দিবলে আখ্যায়িত করেছেন লেবার প্রধান। ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের সময় পাউন্ডের বিরুদ্ধে বাজি ধরে ২২ কোটি পাউন্ড হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগের উত্তরে ডেইলি টেলিগ্রাফকে ওদে বলেন, আমাদের সৌভাগ্য যে লেবার পার্টি একটি ক্যাম্পেইনই ঠিকভাবে করতে পারে না, আর দেশ পরিচালনা তো দূরের ব্যাপার।

শীর্ষ ধনীদের ওই দুই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ছাড়া জিমক র্যাটক্লিফের নাম করেছেন করবিন, যিনি করমুক্ত ব্যবসা করার জন্য এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য ছেড়ে বিশ্বের দ্বিতীয় ছোট দেশ ইউরোপের মোনাকোয় পাড়ি জমিয়েছেন। এছাড়া রুপার্ট মারডক ডিউক অব ওয়েস্ট মিনিস্টারের নাম উল্লেখ করেছেন লেবারপ্রধান, যারা যথাক্রমে দ্য সান সানডে টাইমস কেন্দ্রীয় লন্ডনের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের মালিক।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫