অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়িয়ে চলতি সপ্তাহে সেলফোনের শুল্ক দ্বিগুণ ও পেট্রলের দাম ১২ শতাংশ বাড়িয়েছে জিম্বাবুয়ে। এছাড়া নগদ অর্থ সংকটে জর্জরিত দেশটি আগামী দুই সপ্তাহে নতুন ডলার নোট ও মুদ্রা বাজারে ছাড়বে। খবর ফিন টোয়েন্টি ফোর।
দ্য জিম্বাবুয়ে এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটি (জেডইআরএ) পেট্রলের দাম ১২ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে পণ্যটির দাম লিটারপ্রতি ১৪ দশমিক ৯৭ জিম্বাবুইয়ান ডলার থেকে বেড়ে ১৬ দশমিক ৭৫ ডলারে দাঁড়াচ্ছে এবং ডিজেলের দাম ১৫ দশমিক ৬৪ জিম্বাবুইয়ান ডলার থেকে বেড়ে ১৭ দশমিক ৪৭ ডলার হবে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন ডলারের বিপরীতে জিম্বাবুইয়ান ডলারের দরপতন হওয়ায় জ্বালানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। জ্বালানি আমদানিতে মার্কিন ডলার ব্যবহার করে জিম্বাবুয়ে। এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে জিম্বাবুইয়ান ডলারের বিনিময় হার ১৫ দশমিক ৫৭, যেখানে এর আগে ছিল ১৩ জিম্বাবুইয়ান ডলার।
একই সময় দেশটির টেলিকম নীতিনির্ধারক পোস্টাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি অথরিটি অব জিম্বাবুয়ে (পোট্রাজ) মোবাইল শুল্ক ৯৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। গত আগস্টে ১৮২ শতাংশ বৃদ্ধির পর ফের এ খাতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে।
শুল্ক বৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে পোট্রাজ বলছে, ২০১৯ সালের আগস্টে যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, তা মূল্যস্ফীতির চাপে পড়ে অস্থিতিশীল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে গভর্নর জন মাংগুদাইয়া এক ঘোষণায় জানান, ২ ও ৫ জিম্বাবুইয়ান ডলারের নতুন নোট ছাড়া হচ্ছে। এছাড়া ২ জিম্বাবুইয়ান ডলারের বন্ড কয়েনও ছাড়া হচ্ছে। বর্তমানে মাত্র ৫ ও ২ জিম্বাবুইয়ান ডলারের বন্ড নোট বাজারে রয়েছে।
২০০৯ সাল থেকে শুরু করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বহু-মুদ্রা ব্যবস্থায় ছিল জিম্বাবুয়ে এবং দেশটির প্রধান মুদ্রা ছিল মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে দেশটি বন্ড নোট ও মুদ্রা চালু করে, যা আইনতভাবে মুদ্রা না হলেও স্থানীয় লেনদেনে ডলারের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার হতো। গ্রিনব্যাকের বিপরীতে বন্ড নোটের বৃহৎ পতনের ফলে গত ফেব্রুয়ারিতে ওই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। তখন রিয়াল-টাইম গ্রস সেটলমেন্ট ডলার বা আরটিজিএস নামে নতুন একটি স্থানীয় ডলার ছাড়া হয়।
স্থানীয় মুদ্রার বড় অবচয়নের ফলে অভ্যন্তরীণ লেনদেনে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে জিম্বাবুয়ে সরকার। একই সঙ্গে গত জুনে জিম্বাবুইয়ান ডলার নামে স্থানীয় মুদ্রা ছাড়ে। বন্ড নোট ও মুদ্রাসহ ওই নতুন মুদ্রার আওতায় আরো থাকছে আরটিজিএস ডলার। যদিও আরটিজিএস ও বন্ড নোট প্রচলিত রয়েছে, তবে কর্মকর্তারা সবগুলোকে স্থানীয় জিম্বাবুইয়ান ডলার হিসেবেই অভিহিত করছেন।
২০১৯ সালের আগস্টের শেষ দিকে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত কলামে অর্থমন্ত্রী এমথিউলি এনকিউব বলেন, আরটিজিএস ও বন্ড নোটসহ জিম্বাবুইয়ান ডলার দেশটির একমাত্র বৈধ মুদ্রা।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ২ ও ৫ জিম্বাবুইয়ান ডলারের নতুন নোট চালু হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্য নিশ্চিত করে বলছে না ঠিক কখন তা চালু হবে এবং নতুন নোটগুলো দেখতে কেমন।