বাংলাদেশের উন্নয়নকে
বলা হয় উন্নয়ন
ধাঁধা বা ডেভেলপমেন্ট
প্যারাডক্স। গত দশকগুলোয়
চোখ ধাঁধানো উন্নয়ন না হয়ে
থাকলেও যতটুকু অর্জিত হয়েছে, তা চোখে
ধাঁধা লাগার মতোই। কার কাছে? নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়ের কাছে, যারা জেনে
বা না
জেনে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কিত ছিল; তারা ভাবতেও
পারেনি যে কোনো
একসময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পৃথিবীতে ‘খবর’ হয়ে উঠবে,
সাড়া জাগাবে।
প্রসঙ্গত মনে
পড়ে গেল মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব হেনরি কিসিঞ্জারের কথা। তিনি স্বাধীনতার শুরুতে বাংলাদেশে এসে দেশটিকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ তকমা এঁটে
দিয়েছিলেন। সম্ভবত তিনি পরোক্ষভাবে এ কথাটা
বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, বাংলাদেশের জন্য
সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে বাতি নেই। সেই কিসিঞ্জারের অনুসারীরা বাংলাদেশের এখনকার উন্নয়ন দেখে ভ্রু কুঁচকাবে না তো
কী করবে!
এটাই স্বাভাবিক। উন্নয়ন গবেষক ইউসট ফাল্যান্ড ও জে
পারকিনসনের কাছেও আমাদের উন্নয়ন এক প্রকার
ধাঁধা হিসেবে থাকবে। কেননা পঁচাত্তর সালে
প্রকাশিত এক বইয়ে
ওই দুজন
প্রক্ষেপণ করে বলেছিলেন যে বাংলাদেশ
হচ্ছে উন্নয়নের টেস্ট কেস। অর্থাৎ সন্দেহের অবকাশ নেই যে এখানে
উন্নয়ন সফল হলে অন্য কোথাও তা ব্যর্থ
হবে না। অবশ্য তারা ২০০৭ সালে বাংলাদেশে এসে তাদের ভবিষ্যদ্বাণীর ভুল স্বীকার করে এটাও বলে গেছেন যে টেকসই
উন্নয়ন বাংলাদেশের হাতের নাগালে, যদিও নিশ্চিত
নয়।
যা-ই হোক, উন্নয়নসংক্রান্ত গোলকধাঁধায় আমরাও কিছুটা পড়িনি, তা বোধ হয় হলফ করে বলা যাবে না। কেউই আশা করতে পারিনি যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার চারের নিচ থেকে ৮ শতাংশ ছুঁই ছুঁই করবে; খাদ্য উৎপাদন তিন গুণ বাড়িয়ে দেশটি ‘সরব দুর্ভিক্ষ’ ঠেকাতে সক্ষম হবে; সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি ও ওরাল স্যালাইন বিপ্লব শিশুমৃত্যুর হার ব্যাপক নামিয়ে আনবে; জনসংখ্যার বার্ষিক বৃদ্ধির হার অর্ধেকেরও বেশি নেমে আসবে এবং মোট প্রজনন হার ৬ থেকে ২-তে দাঁড়াবে; স্কুলে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তির হার প্রায় ১০০ শতাংশ এবং ছেলেদের চেয়ে বেশি; আয় দারিদ্র্যের প্রকোপ ৬০ থেকে ২৫ শতাংশে পৌঁছবে, ঘরে ঘরে মোবাইল সেট ইত্যাদি ইতিবাচক উন্নতি হবে। তাছাড়া নোবেলজয়ী অমর্ত্য