চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম পশ্চিম সোনাই। বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের এ গ্রাম পিছিয়ে রয়েছে অনেক দিক থেকেই। অনুন্নত রাস্তাঘাটের পাশাপাশি রয়েছে সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের সংকট। তবে যে বিষয়টি এ গ্রামের মানুষকে সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুলছে, সেটি হলো তাদের শিশুদের শিক্ষা।
কারণ যে উচ্চ বিদ্যালয়ে পশ্চিম সোনাইসহ আশেপাশের অন্তত ১০ গ্রামের শিশুরা পড়ছে, সেটি এমপিওভুক্ত হয়নি দুই যুগেও। এমনকি পাঠদানের অনুমতির বিষয়টিও এখনো ঝুলে আছে। অন্য বিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন করে জেএসসি পরীক্ষা দিলেও বিদ্যালয়টির অধিকাংশ শিক্ষার্থীই মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হতে পারছে না। অথচ গত তিন বছর জেএসসি পরীক্ষায় এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাসের হার শতভাগ।
স্থানীয়রা জানায়, ১৯৯৫ সালে পশ্চিম সোনাই গ্রামে স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা হয় কয়লা পশ্চিম সোনাই উচ্চ বিদ্যালয়। সাত-আট কিলোমিটারের মধ্যে এ এলাকায় আর কোনো উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় পিছিয়ে থাকা অঞ্চলটির শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে বিদ্যালয়টি। স্থানীয় এক মন্ত্রীর ডিও লেটার নিয়ে শুরু হয় পাঠদান। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও পাঠদানের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাওয়া যায়নি। ফলে হয়নি এমপিওভুক্তিও। তার পরও বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ছে। নবম শ্রেণীতে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে শিক্ষার্থী রয়েছে অল্প কয়েকজন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়টি পূর্ণাঙ্গতা পায়নি। ভবন সংকটসহ ধুঁকছে নানা সমস্যায়। এমপিওভুক্তি ও পাঠদানের অনুমতির অভাবে অষ্টম শ্রেণীর পর আর পড়ানো যাচ্ছে না। ফলে এখানে অধ্যয়নরতদের অধিকাংশই মাধ্যমিকের স্তর শেষ করার আগেই ঝরে পড়ছে। কারণ এরপর পড়তে হলে তাদেরকে আট কিলোমিটার দূরের করেরহাট কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হবে। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ে যাতায়তে প্রতিদিন একজনের খরচ হয় প্রায় ১৫০ টাকা। আর এ ব্যয় বহন এখানকার অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই অসম্ভব।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে কয়লা, ইসলামাবাদ, রহমতপুর, পশ্চিম সোনাই, মঘপাথর, জিলতলী, শহীদপুর, সুবলছড়ি, গুজাপাড়াসহ অন্তত ১০ গ্রামের শিক্ষার্থী। দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হয় জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরের চারটি কক্ষে। সাতজন শিক্ষক তাদেরকে সামান্য সম্মানীর বিনিময়ে পাঠদান করছেন। ওই সামান্য সম্মানীয়ও তাদেরকে নিয়মিত দেয়া যাচ্ছে না। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় এবং শিক্ষক সংকটের কারণে