অপর্যাপ্ত বৃষ্টিতে আর্জেন্টিনার ভুট্টা আবাদে ধীরগতি

প্রকাশ: অক্টোবর ২৩, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি বছর বিশ্বজুড়ে মাত্রাতিরিক্ত দাবদাহ বিরাজ করছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে দেশে দেশে কৃষিপণ্য আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যতম প্রধান শস্য উৎপাদনকারী দেশ আর্জেন্টিনাতেও পড়েছে এর প্রভাব। বৃষ্টিপাতের অভাবে দেশটিতে এবার অন্য বছরের তুলনায় ভুট্টা আবাদ ধীরগতিতে রূপ নিয়েছে। খবর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্লাটস।

বিশ্বের শীর্ষ ভুট্টা উৎপাদন ও রফতানিকারক দেশের তালিকায় আর্জেন্টিনার অবস্থান যথাক্রমে পঞ্চম ও তৃতীয়। দেশটিতে বর্তমানে ২০১৯-২০ ভুট্টা উৎপাদন মৌসুম চলছে। বুয়েন্স আয়ারস গ্রেইন এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির কৃষকরা সব মিলিয়ে ১৮ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর কৃষিপণ্যটির আবাদ করতে সক্ষম হয়েছেন, যা মোট আবাদ প্রাক্কলনের মাত্র ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ। এবার মৌসুমে আর্জেন্টিনায় মোট ৬৪ লাখ হেক্টর ভুট্টা আবাদের পূর্বাভাস করেছে সংস্থাটি।

এছাড়া আগের বছরের তুলনায়ও এবার দেশটির ভুট্টা আবাদ নিম্নমুখী। আগের বছরের একই সময়ে মোট ১৯ লাখ হেক্টর কৃষিপণ্যটির আবাদ হয়েছিল। মৌসুমজুড়ে কৃষিপণ্যটির মোট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৬৩ লাখ হেক্টর।

যদিও সর্বশেষ সপ্তাহে আর্জেন্টিনার বেশির ভাগ অঞ্চলে ভালো বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে। এর পরও দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃষ্ট্পািতের অভাবে ভুট্টা আবাদ পিছিয়ে রয়েছে। তবে খাতসংশ্লিষ্টরা প্রত্যাশা করছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই এ অঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের দেখা মিলবে।

খাতসংশ্লিষ্ট এক বিশ্লেষক বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সামনে রেখে আর্জেন্টিনার কৃষিপণ্য রফতানি নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতে বিলম্বের কারণে কৃষকরা কৃষিপণ্য আবাদে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

বুয়েন্স আয়ার্স গ্রেইন এক্সচেঞ্জের বিশ্লেষক মাতিয়াস মিহুরা বলেন, আর্জেন্টিনায় ২৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে। উৎপাদনকারীরা কে নির্বাচিত হবে তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেবে তারা ভুট্টা না সয়াবিন আবাদ করবেন।

তিনি জানান, আবহাওয়া পরিবর্তন না হলে দেশটিতে এবার ভুট্টার তুলনায় সয়াবিন উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ এ রকম আবহাওয়ায় ভুট্টার তুলনায় সয়াবিন উৎপাদন ব্যয় অপেক্ষাকৃত কম।

মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্য অনুযায়ী, আর্জেন্টিনায় একটি উৎপাদন মৌসুমে দুটি পর্যায় ভুট্টা আবাদ করা হয়। প্রথমটি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে, যার সংগ্রহ শুরু হয় এপ্রিল-মে মাসে। দ্বিতীয় পর্যায় ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে আবাদ শুরু হয় এবং এর সংগ্রহ শুরু হয় জুন-জুলাইয়ে। মোট আবাদের অর্ধেক প্রথম পর্যায় এবং বাকি অর্ধেক দ্বিতীয় পর্যায় চাষ করা হয়।

ইউএসডির তথ্য অনুযায়ী, গত উৎপাদন মৌসুমে আর্জেন্টিনা ৪ কোটি ৮০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন করে রেকর্ড করেছিল। গত মৌসুমের দ্বিতীয় পর্যায়ের বাম্পার ফলনের জেরে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানিতে চাঙ্গা ভাব বজায় রয়েছে। মার্চ-সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটি মোট ২ কোটি ৫৭ লাখ টন ভুট্টা রফতানি করেছে। আগের বছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ১ কোটি ৫৩ লাখ টন। চলতি মৌসুমের অক্টোবর-সেপ্টেম্বর পিরিয়ডে দেশটি মোট ৩ কোটি ৩৫ লাখ টন ভুট্টা রফতানি করতে পারে, যা আগের মৌসুমের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ৩ কোটি ২০ লাখ টন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫