রাজনৈতিক কারণে ব্রিটিশ উৎকর্ষের ছোঁয়া আসে নগরকেন্দ্রিক স্থাপনায়

প্রকাশ: অক্টোবর ২৩, ২০১৯

ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ

১৪৯৭ সালে ভাস্কো দা গামা কর্তৃক সামুদ্রিক পথে ভারত গমনের রাস্তা আবিষ্কারের মাধ্যমে ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগের নবযুগের সূচনা হয়। পর্তুগিজদের সঙ্গে অন্যান্য জাতি যেমনডাচ, ফরাসি কিংবা ইংরেজরা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ভারতে আসা শুরু করে। যদিও তখন ভূখণ্ডে মোগল সাম্রাজ্যের সূর্য স্তিমিত হয়নি, বরং উজ্জ্বল আভা ছড়িয়ে চলেছে। যা- হোক, বাণিজ্যের অভিপ্রায়ে এসে ভিনদেশী জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা অদ্ভুত একটি বিষয় আবিষ্কার করে, তা হলো তুলনামূলক অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকা সামুদ্রিক উপকূল। তাছাড়া আরো বিস্ময়কর যে বিষয়টি তারা লক্ষ করে, তা হলো ভারতীয় বাসিন্দারা তাদের রুখে দেয়া কিংবা তাদের সঙ্গে বৈরী কোনো আচারণ না করে বরং খুব সামান্য কিছুর বিনিময়ে তাদের পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে সম্মত হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই নৌসম্বন্ধীয় কলাকৌশলে ইউরোপীয়দের জানা-বোঝা অনেক বেশি ছিল। ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্ব পশ্চিম উপকূলজুড়ে ইউরোপীয় বণিকেরা কারখানা স্থাপন শুরু করে। এভাবে কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য সংগ্রহের লক্ষ্যে তারা ক্রমেই অভ্যন্তরীণ ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে থাকে। মূলত বণিকদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মূল প্রচেষ্টা ছিল মোগল অধিপতির সঙ্গে পারিতোষিকবিষয়ক একটি বার্ষিক চুক্তিতে আসা। এভাবে ইউরোপীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বা বৈরিতা তৈরি হয়। অবস্থায় আঠারো শতকের শুরুর দিকে পর্তুগিজরা তাদের অন্যান্য ইউরোপীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় বাংলায় তুলনামূলক দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে ডাচ, ফরাসি আর ইংরেজরা হুগলি পশ্চিম বাংলার উপকূলে তাদের কারখানা প্রতিষ্ঠায় সফল হয়।

সতেরো শতকের শেষ দিকে মোগল শাসকের কাছ থেকে কোম্পানির জন্য কলকাতা, সুতানুটি গোবিন্দপুরে জামিনদারি অধিকার লাভের মাধ্যমে বাংলায় ইংরেজদের শক্তি আরো জোরালো হয়। এভাবে আঠারো শতকের প্রথম দশকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের পরিধি বিস্তার করতে থাকে। ১৭১৭ সালের রাজকীয় ফরমান প্রদানের মাধ্যমে বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজনৈতিক বাণিজ্যিক প্রভাবের বিষয়টি অনেকটা দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই বলা যায়, ১৬৯০ থেকে ১৭৫৬ সাল ছিল কোম্পানির বাণিজ্যিক পরিধি বিস্তারের চমত্কার সময়, তাছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিতে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে তারা তাদের বাণিজ্যিক ক্ষেত্র বৃদ্ধি করেনি, বরং নিরাপদও করতে সমর্থ হয়েছে।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পথপরিক্রমায় আরো একটি মাইলফলক অর্জিত হয় সম্রাট শাহ আলমের (দ্বিতীয়) সময়ে বাংলা, বিহার উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে। রাজস্ব সংগ্রহের অধিকারের মাধ্যমে ত্বরান্বিত হয় ঔপনিবেশিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া। ১৭৬৭ সালে রবার্ট ক্লাইভকে দ্বিতীয়বারের মতো গভর্নর করে ফোর্ট উইলিয়ামে প্রেরণ করা হলে পরে ১৭৯৩ সালের মধ্যে ঔপনিবেশিক অঞ্চল স্থাপনের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে ক্লাইভ কর্তৃক ক্রমেই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক রাজ্য প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া উন্নীত হতে থাকে।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শুধুই বাণিজ্যিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ না থেকে বরং রাজনীতি-সেনাবাহিনী অর্থনৈতিক বিষয়ে আগ্রহী হতে শুরু করে, তখন মূলত তারা বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো

সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫