কয়েক বছর ধরে নিকেলের বাজারে মন্দা ভাব বজায় রয়েছে। কিন্তু ব্যবহারিক ধাতুটির শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে রফতানি বন্ধ ঘোষণা করায় বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধিতেও নিকেলের চাহিদা বাড়ছে। ফলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে নিকেলের দাম সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। খবর এবিসি।
গত সেপ্টেম্বর থেকে নিকেলের বাজার চাঙ্গা হতে শুরু করে। এ সময় প্রতি টন নিকেলের দাম ১৮ হাজার ডলারে দাঁড়ায়। যেখানে চলতি বছরের শুরুতে প্রতি টনের দাম ছিল ১০ হাজার ৬০৪ ডলার। সে হিসাবে কয়েক মাসের ব্যবধানে ধাতুটির দাম ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
২০২০ সাল থেকে নিকেল রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া। এতে বাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দেয়ার আশঙ্কায় ধাতুটির দাম তখন থেকেই চাঙ্গা হতে শুরু করে। আগামী বছর থেকে চীনের শীর্ষ জায়ান্ট ইস্পাত উৎপাদক একটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় দেশটি বৈদ্যুতিক ব্যাটারি শিল্প উন্নত করতে চায়। এ লক্ষ্যে গত মাসে রফতানি বন্ধের এ ঘোষণা দেয় ইন্দোনেশীয় সরকার, ফলে ধাতুটির প্রতি টনের দাম ১৮ হাজার ১৫৩ ডলার পর্যন্ত ওঠে।
তবে বৈশ্বিক বাণিজ্য অনিশ্চয়তার মধ্যে নিকেলের দাম এখন কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে। মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ ও চীনের অর্থনীতিতে শ্লথগতির ভাবধারা বজায় থাকায় বর্তমানে ধাতুটির দাম টনপ্রতি ১৭ হাজার ডলারের নিচে রয়েছে।
এছাড়া বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহারও বাড়ছে। এসব গাড়িতে জ্বালানির বিকল্প চার্জ ধরে রাখতে ব্যাটারির প্রয়োজন পড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিকাশের সঙ্গে নিকেলের চাহিদা বাড়ছে।
অসবিল গ্লোবাল রিসোর্স ফান্ডের পোর্টফোলিও ম্যানেজার জেমস স্টুয়াটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বৈশ্বিক নিকেলের ৩ শতাংশ বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারিতে ব্যবহার হয়। যেখানে ২০২২ সালের মধ্যে মোট নিকেলের ১০ শতাংশ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এর দ্বিগুণ পরিমাণ নিকেল এ খাতে ব্যবহার হবে বলে মনে করেন তিনি।
বৈশ্বিক নিকেলের ৮০ শতাংশ ইস্পাত তৈরিতে ব্যবহার হয়, যা বাসাবাড়ির পাইপ ও ফ্রিজ তৈরিতে ব্যবহার হয়। কিন্তু বর্তমানে ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নিকেল দিয়ে ব্যাটারি তৈরি শুরু করায় এ খাতেও এখন ধাতুটির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকারক দেশগুলো রফতানি বন্ধের আগেই দেশটি থেকে নিকেল সরবরাহ বাড়িয়েছে। বিশেষ শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদক চীন দেশটি থেকে উল্লেখযোগ্য নিকেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে।