বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি করে মোট ১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করবে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। এ টাকা পুঁজিবাজারে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করা হবে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সক্রিয় থাকবে আইসিবি। গতকাল ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সঙ্গে পুঁজিবাজার উন্নয়নবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন।
আবুল হোসেন বলেন, ‘আজ
বিকালে সোনালী ব্যাংক আমাদের বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে। এভাবে
রাষ্ট্রায়ত্ত আরো চারটি ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা করে মোট পাঁচটি ব্যাংক থেকে ১
হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করব। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত সব টাকা আমরা পুঁজিবাজারে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ
করব।
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে
বাজারকে সাপোর্ট দেয়া আইসিবির একার পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ এখন বাজারের আকার অনেক
বড়। কিন্তু সে তুলনায় ফান্ডের পরিমাণ কম। তাই আইসিবির মতো যদি আরো পাঁচটি বিনিয়োগ
প্রতিষ্ঠান ও ২০-২৫ জন মার্কেট মেকার তৈরি করা যায়, তাহলে বাজার ভালো অবস্থানে যাবে।
সভায় আইসিবি ও ডিবিএর প্রতিনিধিরা
বাজারের বিদ্যমান সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, তালিকাভুক্ত
কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন একটি বড় সমস্যা। বর্তমানে কিছু কোম্পানি ছাড়া বাকিরা
তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে ভুল তথ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে। ফলে সেই
শেয়ারের দাম টিকে থাকে না এবং শেয়ারটির প্রতি বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়ে ফেলেন।
শেয়ারটি অভিহিত মূল্যের নিচে অবস্থান করে। এছাড়া বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ভালো
কোম্পানি আসছে না। ভালো কোম্পানির পুঁজিবাজারে আসা দরকার বলে মনে করেন তারা।
বক্তারা বলেন, বাজারে
ভালো শেয়ার দেয়ার বিষয়ে আইসিবিসহ সরকারকেও চেষ্টা করতে হবে। প্রাইমারি মার্কেটে
শেয়ার নিয়ে যেন কারসাজি করতে না পারে এবং আর্থিক প্রতিবেদন যেন স্বচ্ছ হয়, সেদিকে
লক্ষ রাখতে হবে। আইসিবি যেসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছে, সেগুলোর
বিষয়ে আইসিবিকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কোম্পানি নগদ ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না
কেন অথবা কম দিচ্ছে কেন, সে বিষয়টি এবং কোম্পানিগুলোর সার্বিক কার্যক্রমের দিকে আইসিবিকে লক্ষ
রাখতে হবে।
ডিবিএর সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, বাজার
দুইভাবে ভালো অবস্থানে যেতে পারে। প্রথমত,
যদি আমরা সবাই ভালো হই। দ্বিতীয়ত, প্রাকৃতিক
নিয়মে। আমরা যদি ভালো না হই,
তবে দ্বিতীয় উপায়ে ভালো হতে সময় লাগবে। তবে সে
সময় বেশি দিন নয়। কারণ পুঁজিবাজারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত এখন বটম লাইনে চলে এসেছে।
ডিএসইর পিই রেশিও ১২-এর কাছাকাছি অবস্থান করছে। এর আগে পিই রেশিও ১২-তে আসার পর
বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এবারো স্বাভাবিকভাবেই ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমি আশাবাদী।
আইসিবির বিশ্লেষক টিমও এমনটাই মনে করছে।
তিনি আরো বলেন, আইসিবির
মতো বোকাররাও সামর্থ্য অনুযায়ী বাজারে ভূমিকা রাখবেন। কারণ বর্তমানে বাজারকে
আইসিবির পক্ষে একা সাপোর্ট দেয়া সম্ভব নয়। আমাদের সবাইকেই সাপোর্ট দিতে হবে।
আইসিবি সোনালী ব্যাংক থেকে যে ২০০ কোটি টাকা পেয়েছে, তা ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য
পরামর্শ দিচ্ছি।