পুনর্ব্যবহারযোগ্যকরণ ব্যয় বৃদ্ধি

চ্যালেঞ্জের মুখে প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাসের উদ্যোগ

প্রকাশ: অক্টোবর ১৫, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইউরোপে প্লাস্টিক বর্জ্যের বিরুদ্ধে লড়াই আরো ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে যাচ্ছে। রিসাইকেল্ড প্লাস্টিকের দাম বাড়তে থাকায় মহাদেশটিতে প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাসের ব্যয় প্রতি বছর ২৫ কোটি ডলার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর গার্ডিয়ান।

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক ফ্লেকের দাম প্রথমবারের মতো ভার্জিন প্লাস্টিকের (সরাসরি পেট্রোকেমিক্যাল ফিড-স্টক থেকে উৎপাদিত প্লাস্টিক) চেয়ে ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। সাধারণত কোমলপানীয়র বোতল থেকে শুরু করে গ্লিটারের মতো পণ্য প্রস্তুতে রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক ফ্লেক ব্যবহূত হয়।

বহু বছর ধরে রিসাইকেল্ড ফ্লেক থেকে প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতের ব্যয় ভার্জিন প্লাস্টিকের চেয়ে সস্তা ছিল। ফলে এত দিন টেকসই বিকল্পটি সাশ্রয়ীও ছিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এ মুহূর্তে বড় ম্যানুফ্যাকচারারসের জন্য নতুন প্লাস্টিক ব্যবহারই সাশ্রয়ী হবে।

পণ্যবাজার বিশ্লেষক সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটসের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতি টন নতুন উৎপাদিত প্লাস্টিকের তুলনায় প্রতি টন রিসাইকেল্ড প্লাস্টিকের জন্য বর্তমানে অতিরিক্ত ৭২ ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নতুন পণ্যে রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক যুক্ত করার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা এর চাহিদা যেমন বাড়িয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের ব্যাপক সরবরাহের কারণে নতুন প্লাস্টিক তৈরিও অনেক সস্তা হয়ে উঠেছে। আর এসব কারণে পুরো ইউরোপের টেকসই ম্যানুফ্যাকচারারদের বছরে অতিরিক্ত ২৫ কোটি ডলার ব্যয় হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।

দাম বাড়ায় বহু বড় ম্যানুফ্যাকচারারকে হয়তো তাদের মেশিনারি আবার ভার্জিন প্লাস্টিকের জন্য রূপান্তরে সংগ্রাম করতে হবে। কিন্তু তুলনামূলক ক্ষুদ্র ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানি খরচ কমাতে হয়তো রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।

এ পরিস্থিতি প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে লড়াইকে আরো কঠিন করবে। ভার্জিন প্লাস্টিক সস্তা হওয়া এবং ম্যানুফ্যাকরারদের রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার মানে হলো স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বোতল ও ফলের ঝুড়ি প্রস্তুতকারকরা পুরনো রিসাইকেল্ড বোতল আবার ব্যবহার করার চেয়ে জীবাশ্ম-জ্বালানিভিত্তিক নতুন প্লাস্টিক ব্যবহারে বেশি আগ্রহী হবে।

এদিকে মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব কমিয়ে আনতে আরো বেশি রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক ব্যবহারের চাপে রয়েছে প্লাস্টিক প্যাকেজিং উৎপাদকরা। কোকা-কোলার ইউরোপীয় ব্যবসা আগামী দুই বছরের মধ্যে নিজেদের কোমলপানীয়র বোতল তৈরিতে ভার্জিন প্লাস্টিক ব্যবহারের পরিমাণ ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে। একই সঙ্গে স্প্রাইটের বোতলগুলো যাতে আবার শতভাগ ব্যবহার করা যায়, তা নিশ্চিত করতে বোতলগুলোর রঙ সবুজ থেকে স্বচ্ছ করা হবে।

যেসব কোম্পানি তাদের পণ্যে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ রিসাইকেল্ড প্লাস্টিক ব্যবহার না করবে, সেগুলোর ওপর করারোপের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। কিন্তু এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত কোম্পানিগুলোর কাছে হয়তো প্যাকেজিংয়ের জন্য নতুন প্লাস্টিকই সাশ্রয়ী মনে হবে।

ভার্জিন প্লাস্টিকের ওপর করারোপের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা বাজারে রিসাইকেল্ড প্লাস্টিকের পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনাকে সমর্থন দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫