দেশের অর্থনীতিতে কৃষিই সবচেয়ে গুরুত্ব নিয়ে অবস্থান করবে: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশ: অক্টোবর ১২, ২০১৯

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, গাজীপুর

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। এ দেশের দারিদ্র বিমোচনের সবচেয়ে বড় ইঞ্জিন  কৃষি। অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সমাজনীতি সবকিছুই কৃষিকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। তাই এদেশের অর্থনীতিতে কৃষি সবচেয়ে গুরুত্ব নিয়ে অবস্থান করবে। এদেশের গ্রামের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ কোন না কোনভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের আগে চ্যালেঞ্জ ছিল দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া। এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুষ্টি জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। তাই আগামী দিনের কর্মসূচি প্রণয়নে আন্তরিক হতে হবে, দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে।

শনিবার মন্ত্রী গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর ‘কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এর আগে কৃষিমন্ত্রী বারি’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান, কীটতত্ত্ব, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ল্যাব পরিদর্শন করেন এবং ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষের পাশে স্থাপিত বিভিন্ন বিভাগের স্টল পরিদর্শন করেন।

গত অর্থ বছর যে সকল গবেষণা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল সেগুলোর মূল্যায়ন এবং এসব অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী বছরের গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালার কারিগরি অধিবেশন ১৩-১৮ অক্টোবর ২০১৯ পর্যন্ত  অনুষ্ঠিত হবে। 

এই গবেষণা পর্যালোচনা তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। আঞ্চলিক গবেষণা পর্যালোচনা, অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা ও কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা। প্রথমে আঞ্চলিক পরে অভ্যন্তরীণ ও সবশেষে কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালার মাধ্যমে গত বছরের গবেষণা কার্যাবলির বিশ্লেষণের মাধ্যমে পরবর্তী বছরের গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন পর্যায়ের এই কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষক প্রতিনিধি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আঞ্চলিক কৃষির সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সেই আলোকে গবেষণা কার্যক্রম প্রণীত হয়। আঞ্চলিক গবেষণা পর্যালোচনা অঞ্চল ভিত্তিক অনুষ্ঠিত হয়। অভ্যন্তরীণ ও কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা বারি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত ২১২টি ফসলের ৫৫৮টি উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিডসহ), রোগ প্রতিরোধক্ষম ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধী জাত এবং মোট ১ হাজার ৮২টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে এবং বর্তমানে ২০৭টি ফসলের উপর গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে দেশে তেলবীজ, ডালশস্য, আলু, গম, সবজি, মসলা এবং ফল ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব প্রযুক্তির উপযোগিতা যাচাই বাছাই ও দেশের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কর্মসূচি গ্রহণ করাই এ কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব  মো. নাসিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিশিষ্ট বিজ্ঞানী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএআরআই-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক (অব.) ও এমেরিটাস সায়েন্টিস্ট, এনএআরএস, ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম, সাফল্য ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার উপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন বারি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. আব্দুল ওহাব ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. বাবু লাল নাগ।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বারি’র অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বারি’র স্টেকহোল্ডার তথা পলিসিমেকার, জনপ্রতিনিধি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নার্সভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিএডিসি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও ও কৃষিসংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং বারি’র বিভিন্ন বিভাগের বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫