বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ, ব্যথিত ও মর্মাহত। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। এ হত্যাকাণ্ড নির্মম ও পৈশাচিক। আমরা আবরারের হত্যাকারীদের দ্রুততম সময়ে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, জ্ঞানচর্চা ও বিতরণই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ। মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও পরমতসহিষ্ণুতা ব্যাহত হলে বিশ্ববিদ্যালয় তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। আবরারের এ নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর চরম অসহিষ্ণুতার বহিঃপ্রকাশ, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও চিন্তাচেতনার পরিপন্থী। দুঃখের বিষয়, গত কয়েক দশকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অসহিষ্ণুুতার চর্চা চলছে। সমাজে বিদ্যমান নীতিহীনতা, বিবেকশূন্যতা ও চিন্তাজগতের আড়ষ্টতা আমাদের এক অজানা গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যমান এ পরিস্থিতির প্রতিকার না হলে জাতি হিসেবে আমরা অন্তঃসারশূন্য ও দেউলিয়া হয়ে পড়ব।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীর বাংলাদেশ। এ শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে অপার সম্ভাবনা, যেমনটি ছিল আবরারেরও। এ বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর চিন্তার জগতে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত না করা গেলে এবং শিক্ষাঙ্গনে সহিষ্ণু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে না পারলে আগামী প্রজন্মের কাছে আমরা দায়বদ্ধ থাকব। সব রাজনীতিবিদ, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং নাগরিক সমাজসহ সবার কাছে আমাদের উদাত্ত আহ্বান—আসুন, আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে শিক্ষাঙ্গনকে প্রকৃত মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করি এবং সবাই মিলে শিক্ষাঙ্গনে সহিষ্ণু পরিবেশ সৃষ্টির কার্যকর উদ্যোগ নিই। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়ে উঠুক শিক্ষাবান্ধব, নিরাপদ ও মানবিক। প্রধানমন্ত্রী আবরারের হত্যাকারীদের অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা প্রত্যাশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এ হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হবে।