দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া

২০২৫ নাগাদ ইন্টারনেট অর্থনীতির আকার দাঁড়াবে ৩০০ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশ: অক্টোবর ০৬, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্টারনেটভিত্তিক অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত বড় হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রাইডশেয়ার ও ফুড ডেলিভারি সার্ভিসের ব্যবহার এবং অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা যে হারে বাড়ছে, তাতে ২০২৫ সাল নাগাদ এ অর্থনীতির আকার ৩০০ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড গড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্প্রতি গুগল ও সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। খবর রয়টার্স।

সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান টিমাসেক হোল্ডিংস, বৈশ্বিক বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান বেইন অ্যান্ড কোম্পানি ও গুগলের যৌথ গবেষণায় বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ইন্টারনেট অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে ২০০ শতাংশ। চলতি বছর এ অর্থনীতির আকার ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।

ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে এ বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে এর আগে ২০২৫ সাল নাগাদ ইন্টারনেট অর্থনীতির আকার তিন গুণ বেড়ে ২৪০ বিলিয়ন ডলার হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। আর গবেষণা অনুযায়ী, এ প্রবৃদ্ধিতে এককভাবে অবদান রাখবে তরুণ প্রজন্ম। কারণ এ প্রজন্ম তাদের সেলফোনটি ব্যবহার করেই ব্যাংক লেনদেন, গেম খেলা থেকে শুরু করে উড়োজাহাজের টিকিট কেনার কাজও করছে।

৬৪ পৃষ্ঠার গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, প্রবৃদ্ধির এ গতি আগের সব প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশের কাছে এখন ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়ে গেছে। সামনে এটি আরো সুলভ হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল সেবার প্রতি মানুষের আস্থা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশেষ করে ই-কমার্স, রাইডশেয়ার অসম্ভব সম্ভাবনার দুটি খাত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গত চার বছরে এ অঞ্চলে অনলাইন কোম্পানিতে বিনিয়োগ হয়েছে ৩৭ বিলিয়ন ডলার। এ বিনিয়োগের সিংহভাগই গেছে অনলাইন ফ্যাশন কোম্পানি জিলিংগো, রাইডশেয়ারিং ইউনিকর্ন (১ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের কোম্পানি) গ্র্যাব এবং গোজেকের মতো কোম্পানিতে।

এর মধ্যে রাইডশেয়ারিং অর্থনীতির আকার এখন ১৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৫ সালের তুলনায় চার গুণ। ২০২৫ সাল নাগাদ এ খাতের আকার ৪০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ফুড ডেলিভারি খাতও রাইডশেয়ারিংয়ের সমানতালে চলবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে ২০১৪ সাল থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বার্ষিক গড়ে ৫ শতাংশে রয়েছে। এ হার বৈশ্বিক গড়ের অনেক বেশি। ফলে সিনো-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে এ অঞ্চলটিই এখন বিনিয়োগের সবচেয়ে লোভনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইন মিলিয়ে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৩৬০ মিলিয়ন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চার বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ২৬০ মিলিয়ন। যেখানে ডিজিটাল মনিটরিং প্রতিষ্ঠান অয়ারসোস্যালের হিসাবে, বর্তমানে সারা বিশ্বে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন। এটি এক বছর আগের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি।

তবে ইন্টারনেট অর্থনীতির এ দ্রুত প্রবৃদ্ধির বিপরীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কিছু সমস্যা ও বাধাও রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো সরকারি বিধিনিষেধ; এর পরই দক্ষ কর্মীর অভাব।

মালয়েশিয়ার প্রতিযোগিতা কমিশন গত বৃহস্পতিবার রাইডশেয়ারিং কোম্পানি গ্র্যাবকে ২০ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলার জরিমানার সুপারিশ করেছে। কোম্পানিটি অন্য প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রচারণায় তাদের চালকদের বাধাদানের মাধ্যমে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার বাজার বাধাগ্রস্ত করছে বলে কমিশনের অভিযোগ। তবে এক মাসের মধ্যে আপিল করতে পারবে গ্র্যাব।

অন্যদিকে সিঙ্গাপুর গত সপ্তাহে ফেসবুক ও টুইটারের মতো সোস্যাল মিডিয়াকে লক্ষ্য করে কঠোর আইন করেছে। এসব প্লাটফর্মে প্রকাশিত কোনো কনটেন্ট সরকার ভুয়া বা মিথ্যা বলে মনে করলে সেটি তাদের মুছে ফেলতে হবে। এতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা খর্ব হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তাছাড়া সিঙ্গাপুরে ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো ভয়াবহ কর্মীসংকটে ভুগছে। দেশটিতে বিদেশী কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে আইন বেশ কঠোর।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫