এশিয়ার বাজারে কমতির দিকে এলএনজির দাম

প্রকাশ: অক্টোবর ০৬, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

এশিয়ার বাজারে কমতির দিকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ভোক্তা চীনসহ আঞ্চলিক দেশগুলোয় জাতীয় ছুটি থাকায় বাজার বন্ধ রয়েছে। ফলে এলএনজির সরবরাহ থাকলেও চলতি সপ্তাহে দাম কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।

উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় নভেম্বর সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৫ ডলার ৫৫ সেন্টে। যেখানে এর আগের সপ্তাহে দাম ছিল ৫ ডলার ৭৫ সেন্ট। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চীনে দীর্ঘ ছুটি এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় সরকারি ছুটি থাকায় ব্যবসায়ীরা এখন কার্যত লেনদেন বন্ধ রেখেছে।

কয়েক বছর ধরে এলএনজির মৌসুমভিত্তিক বাজারদরের মধ্যে জ্বালানি পণ্যটির দাম এখন সর্বনিম্নে রয়েছে। যদিও এ সময়ে বৈশ্বিক এলএনজির ব্যবহার বেড়েছে। চীনের চাহিদার প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল থাকা এবং নতুন নতুন প্লান্ট থেকে উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বৃদ্ধি না পাওয়ায় জ্বালানি পণ্যটির দাম কমতির দিকে রয়েছে বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে ইউরোপের বাজারে এলএনজি লেনদেন কেন্দ্র নেদারল্যান্ডসে নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে জ্বালানি পণ্যটির দাম বেড়েছে। কিন্তু তাপমাত্রা কমে যাওয়ার বিষয়ে কোনো পূর্বাভাস না থাকায় জ্বালানি পণ্যটির ভবিষ্যৎ বাজার মন্দা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

জ্বালানি ও পণ্যবিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটস জানিয়েছে, ব্রিটিশ ডাচ তেল-গ্যাস কোম্পানি শেল তাদের একটি কার্গো ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে চীনের তিয়ানজিনে সরবরাহ করার লক্ষ্যে ডাচ কোম্পানি ভিটলের কাছে বিক্রি করেছে। যেখানে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মালের ইউনিটের দাম ধরা হয়েছে ৬ ডলার ২৫ সেন্ট।

আর ইউরোপীয় বেঞ্চমার্কে নভেম্বর সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটের দাম উঠেছে ৫ ডলার ১৫ সেন্ট। যেখানে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দাম ছিল ৩ ডলার ৫১ সেন্ট। গত বছরের একই সময়ে যেখানে জ্বালানি পণ্যটির দাম ছিল ৯ ডলার ৩৮ সেন্ট।

গ্যাস ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইউরোপ অ্যাসোসিয়েশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া ও পোল্যান্ডে গ্যাসের শতভাগ মজুদ রয়েছে। আর ইউরোপে গড় মজুদ রয়েছে ৯৭ দশমিক ৪ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীত মৌসুমে এলএনজির ব্যবহার বাড়লেও ইউরোপে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে। এছাড়া ব্রিটেন ও নরওয়েতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এ সময়ে সরবরাহ তেমন বাড়বে না।

ইউরোপের বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহের মধ্যে ডাচ বেঞ্চমার্ক তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গ্যাস ও জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান বোটাস থেকে শীতকালীন সরবরাহের লক্ষ্যে চারটি এলএনজি কার্গো কিনেছে। বাড়তি সরবরাহের প্রয়োজন না থাকায় বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ছাড়ে এ তেল কিনতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অন্যদিকে গ্যাসের দাম কমিয়ে দিয়েছে মিসর। সিমেন্ট, ধাতব পণ্য ও সিরামিক উৎপাদন শিল্পে গ্যাসের দাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছে দেশটির সরকার। যেখানে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ ডলার ৫০ সেন্ট থেকে ২ ডলার এবং ৫ ডলার ৫০ সেন্ট থেকে ৬ ডলারের মধ্যে।

তবে গ্যাসের বাজারে মন্দার পূর্বাভাস মিললেও ইউরোপের ব্যবসায়ীরা কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে জ্বালানি পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী। এর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্সের নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের ব্যবহার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন ট্রানজিট চুক্তি। ফলে গ্যাসের সরবরাহ কমে যেতে পারে অথবা ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে পারে, যা মূল্যবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫