চলতি বছরে প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস প্রায় অর্ধেকের বেশি কমিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)। বিশ্ব অর্থনীতিতে শ্লথগতি অব্যাহত থাকলে তা জীবনমান ও কর্মসংস্থানে প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর বিবিসি।
ডব্লিউটিওর পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০১৯ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্য ১ দশমিক ২০ শতাংশ বাড়বে, যেখানে গত এপ্রিলে ২ দশমিক ৬০ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।
একই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২ দশমিক ৩০ শতাংশে নেমেছে।
বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতির পেছনে প্রধান অর্থনীতিগুলোর শ্লথগতির প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্যযুদ্ধ ও ব্রেক্সিট নিয়ে চলমান অনিশ্চয়তাকে দায়ী করা হয়েছে।
২০১৯ সালের প্রথমার্ধে মার্চেন্ডাইজ বাণিজ্য মাত্র শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম।
‘উচ্চহারের অনিশ্চয়তার’
কথা উল্লেখ করে ডব্লিউটিও সতর্ক করে বলছে, বছরান্তে বৈশ্বিক বাণিজ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। যেখানে ১ দশমিক ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও তা এক দশকের সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হবে।
ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদো বলেন, অনিশ্চয়তার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন বিনিয়োগ ও কর্মী নিয়োগ পিছিয়ে দিয়েছে। এতে প্রবৃদ্ধি সংকুচিত হচ্ছে এবং জীবনমান ঝুঁকিতে পড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
আজেভেদো বলেন, বাণিজ্য পূর্বাভাস হতাশাজনক হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ডব্লিউটিও সদস্য রাষ্ট্রগুলো যদি নিজেদের মধ্যে বিরোধ মীমাংসা করে, তাহলে ওই পরিস্থিতি এড়ানো যাবে।
ডব্লিউটিওর সংশোধিত পূর্বাভাসটি এমন সময় এল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য আলোচনার কয়েক সপ্তাহ আগে ব্রেক্সিট অনিশ্চয়তা ইউরোপের অর্থনীতিকে সংকটে ফেলেছে।
বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতি একে অন্যের শতকোটি ডলারের পণ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছে। চলতি মাসে চীনের আরো পণ্যে শুল্ক আরোপের কথা যুক্তরাষ্ট্রের।
এদিকে বাণিজ্য নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডার মধ্যকার একটি বাণিজ্য চুক্তি এখনো ওয়াশিংটনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রকাশিত উপাত্তে দেখা গেছে, ১০ বছরের মধ্যে এ খাতে শেয়ারবাজারে সবচেয়ে শ্লথগতির লেনদেন হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন বাণিজ্য বিরোধের দ্রুত নিষ্পত্তির সম্ভাবনা খুব কম এবং পূর্বের অনেক বিরোধের মতো কয়েক বছর ধরে তা চলতে পারে।
বাণিজ্য সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হলে ২০২০ সালে বাণিজ্যের পরিমাণ ২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করছে ডব্লিউটিও।