সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়

অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে বড় বাধা জনপ্রতিনিধিরা

প্রকাশ: জানুয়ারি ০১, ১৯৭০

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোয়, বিশেষ করে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জে বিপুলসংখ্যক অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বাধার কারণে অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয় না বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনার একপর্যায়ে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ নরসিংদী এলাকায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের বিরোধিতা অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সংসদ সদস্য হোক বা অন্য কোনো রাজনৈতিক চাপ হোক তা দেখলে চলবে না। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকাজ অব্যাহত রাখতে হবে।

কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আলী আজগার, নূরুল ইসলাম তালুকদার, আছলাম হোসেন সওদাগর, মোছা. খালেদা খানম বেগম নার্গিস রহমান।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ধরনের একটি অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু কমিটি বলেছে, সংসদ সদস্যর পক্ষ থেকেই হোক বা অন্য কোনো রাজনৈতিক চাপ হোক, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।

বৈঠকের কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, সরকারি মালিকানাধীন ছয়টি গ্যাস কোম্পানির মধ্যে চারটি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৯৭ হাজার ৪৩৫টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। সময় ৩০৬ দশমিক কিলোমিটার অবৈধ গ্যাসলাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিনের সিংহভাগই ছিল আবাসিক খাতের। আবাসিকের ৯৭ হাজার ৮৩টি চুলা সময় বিচ্ছিন্ন করা হয়। আর বাণিজ্যিক খাতের ২০২টি, শিল্প খাতের ৮৭টি, সিএনজি ২২টি ক্যাপটিভ সংযোগ ৪১টি।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে অবৈধ গ্যাস বিদ্যুতের সংযোগ চিহ্নিত করতে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে গ্যাসের সিস্টেম লস সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনার পাশাপাশি সিস্টেম লসের স্ট্যান্ডার্ন্ড নির্ধারণ করে দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, গ্যাস সরবরাহে সিস্টেম লস শতাংশের একটু বেশি। উত্পাদিত গ্যাসের ৪০ শতাংশ ব্যবহারকারী আবাসিক সংযোগসহ বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো সিস্টেম লসের জন্য পুরোপুরি দায়ী। তবে সার কারখানা বিদ্যুেকন্দ্রসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহূত বাকি ৬০ শতাংশে কোনো সিস্টেম লস নেই। এসব বিষয় মাথায় রেখে সিস্টেম লসের প্রকৃত হার নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে ২০২০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উত্পাদন ২৩ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ ৯৬ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানে মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। বৈঠকে পেট্রোবাংলার গ্যাস বিপণন কোম্পানিগুলোর বিদ্যমান সিস্টেম লস হ্রাসকরণে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা হয় সিস্টেম লস সামগ্রিকভাবে না দেখিয়ে পৃথকভাবে দেখানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

বৈঠকে অগভীর গভীর সমুদ্রসহ দেশে তেল, গ্যাস, কয়লা অন্যান্য খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে ২০২৩ সালের মধ্যে পাঁচ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫