চীনকে ‘মুদ্রা কারসাজিকারক’ হিসেবে ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ: আগস্ট ০৭, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মুদ্রা কারসাজিকারক’ হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, বেইজিংকে ‘মুদ্রা কারসাজিকারক’ হিসেবে ওয়াশিংটনের ঘোষণা আন্তর্জাতিক আর্থিক শৃঙ্খলে মারাত্মক ক্ষতি করবে এবং আর্থিক বাজারে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘোষণায় বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ আরো বাড়বে। খবর বিবিসি, সিএনবিসি ও রয়টার্স।

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে চীনকে ‘মুদ্রা কারসাজিকারক’ উল্লেখ করে বিবৃতি দেয়। ক্লিনটন প্রশাসনের পর এমন ঐতিহাসিক পদক্ষেপ আর কখনো নেয়নি হোয়াইট হাউজ। মাকির্ন ডলারের বিপরীতে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের মানের বড় পতন ঘটার পর এ ঘোষণা দেয়া হলো।

ওই বিবৃতিতে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলছে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভেন মানিউচিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তত্ত্বাবধানে চিহ্নিত করছেন যে চীন ‘মুদ্রা কারসাজিকারক’। এ চিহ্নিতকরণের ফলাফল হিসেবে ট্রেজারি সেক্রেটারি মানিউচিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে মিলে চীন সর্বশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে যে অন্যায্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পেতে চাইছে, তা অপসারণ করবেন।

সোমবার ডলারের বিপরীতে চীনা মুদ্রার বিনিময় হার ৭ ইউয়ানের নিচে নেমে আসে। ২০০৮ সালের পর মুদ্রাটির এত বড় পতন দেখা গেল। ৩০ হাজার কোটি ডলার চীনা পণ্যে নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আগামী ১ সেপ্টেম্বর এ শুল্কারোপ কার্যকর হওয়ার কথা। ধারণা করা হচ্ছে, এ ঘোষণার পাল্টা জবাব হিসেবেই মুদ্রাটির মানের এমন পতন ঘটেছে। তবে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, চীনা পণ্যের ওপর আরো শুল্ক আরোপ করতে পারেন ট্রাম্প, এ আশঙ্কা থেকেই এ পতন। ট্রাম্প বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন, নিজ দেশের রফতানিকে সহায়তা করতে চীন অন্যায্যভাবে নিজেদের মুদ্রা অবমূল্যায়িত রাখে।

ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট আরো বলছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোয় নিজেদের মুদ্রা অবমূল্যায়িত করতে চীন স্থূল পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে অতীতে এ ধরনের পদক্ষেপ সক্রিয়ভাবে নিয়েও দেশটি যথেষ্ট পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বজায় রখেছে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ ও চীনের বাজার স্থিতিশীলতা যৌক্তিকভাবে নিশ্চিত করছে যে চীনের নিজ মুদ্রার অবমূল্যায়নের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অন্যায়ভাবে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পাওয়া।

এদিকে ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) বলছে, এটি মুদ্রা বিবাদ সৃষ্টি করবে, যার ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক পুনরুদ্ধার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ওয়াশিংটনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চীনের পক্ষ থেকে তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়।

নিজেদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে পিবিওসি বলছে, বাণিজ্য বিবাদ সামাল দেয়ার জন্য বিনিময় হারকে চীন কখনো অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেনি, আগামীতেও করবে না। ব্যাংকটি বলছে, উঁচু পাহাড়ে ওঠার আগেই নিজেদের ঘোড়া (কৌশল) নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দিচ্ছে চীন। দেশটিকে ভুল কৌশলের পরিণাম বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, ভুল পথে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।

বানোকবার্নের প্রধান বাজার বিশেষজ্ঞ মার্ক চ্যান্ডলার বলছেন, মুদ্রাযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটি আরেকটি পদক্ষেপ। এটি বাণিজ্যকে আরো কঠিন করে তুলবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫