এপ্রিল-জুন প্রান্তিক : এক দশক পর লোকসানে ভারতী এয়ারটেল

প্রকাশ: আগস্ট ০৫, ২০১৯

বণিক বার্তা ডেস্ক   

২০১৯-২০ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) এক দশক পর লোকসানে পড়েছে ভারতী এয়ারটেল। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ভারতীয় সেলফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠানটির নিট লোকসান ২ হাজার ৮৬৬ কোটি রুপিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে শুধু জুনেই প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি রুপি। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক খতিয়ানে এমন তথ্যই জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।

ভারতের টেলিযোগাযোগ খাতে ধনকুবের মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স জিও ইনফোকমের প্রবেশের পর তীব্র প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়। এতে নতুন মাত্রা যোগ করে সেলফোন অপারেটর ভোডাফোন ইন্ডিয়া ও আইডিয়া লিমিটেডের একীভূত হয়ে কার্যক্রম জোরদারের উদ্যোগ। শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যবসায় নীতি অনুসরণ করে আসা জিও গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতী এয়ারটেলকে পেছনে ফেলে এরই মধ্যে দেশটির দ্বিতীয় বৃহৎ সেলফোন অপারেটরের অবস্থান দখলে নিয়েছে। দেশটির টেলিযোগাযোগ খাতে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ভোডাফোন-আইডিয়া লিমিটেড। জিও বাজারে আসার পরই চাপে পড়েছিল ভারতী এয়ারটেল। তবে এতদিন সে চাপ সামলে নিলেও গত প্রান্তিকে ভারতের তৃতীয় বৃহৎ সেলফোন অপারেটরটির গ্রাহক সংখ্যা উল্লেখযোগ্য কমায় এক দশকের মধ্যে প্রথম কোনো প্রান্তিকে আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েছে।

রিলায়েন্স জিওর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ভারতের সব টেলিযোগাযোগ কোম্পানিই কমবেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। অবিশ্বাস্য দামে ডাটা সেবা আর আনলিমিটেড বিনামূল্যের কল সুবিধা দিয়ে দেশটির বাজারে ঝড় তুলেছে মুকেশ আম্বানির টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানটি।

ভারতের টেলিযোগাযোগ খাতে এক দশকের বেশি সময় শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছিল সুনিল মিত্তালের টেলিযোগাযোগ কোম্পানি ভারতী এয়ারটেল। ভোডাফোন ইন্ডিয়া ও আইডিয়া লিমিটেড একীভূত হওয়ায় গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় বাজারটিতে শ্রেষ্ঠত্ব হারায় ভারতী এয়ারটেল।

টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (টিআরএআই) প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় ভারতী এয়ারটেলকে পেছনে ফেলেছে জিও। এর ফলে এখন মোট গ্রাহক সংখ্যার বিচারে ভারতের তৃতীয় বৃহৎ সেলফোন অপারেটর ভারতী এয়ারটেল। তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভারতের টেলিযোগাযোগ খাতের শীর্ষ অবস্থান থেকে তিন নম্বরে নেমে এসেছে সুনিল মিত্তাল পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি।

এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে মোবাইল রাজস্বে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। গ্রাহকপ্রতি গড় রাজস্ব বেড়েছে ১২৯ টাকা। তবে একই সময় ডাটা ট্র্যাফিক দ্বিগুণ হয়েছে। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ভারতে ফোরজি ডাটা ব্যবহারকারী ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৯ কোটি ৫২ লাখে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ৫ কোটি ৮৩ লাখ।

টিআরএআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিলায়েন্স জিওর গ্রাহক সংখ্যা গত মে মাস শেষে ৩২ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজারে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ভারতী এয়ারটেল এবারই প্রথম ৩২ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে জায়গা পেয়েছে। এরই মধ্যে টাটা টেলিসার্ভিসেসকে অধিগ্রহণ করেছে এয়ারটেল। শিগগিরই প্রতিষ্ঠানটির ১ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার গ্রাহককে নিজেদের টেলিযোগাযোগ সেবার আওতায় আনবে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহক সমন্বয় সম্পন্ন হলে এয়ারটেল পুনরায় স্থানীয় বাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের ক্রমবর্ধমান টেলিযোগাযোগ খাতে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসা রিলায়েন্স জিওর জন্য সন্তুষ্টির। তবে সেলফোন অপারেটরটির এ অর্জন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য।

গত মে মাসে ভারতী এয়ারটেল ও ভোডাফোন আইডিয়ার বহু গ্রাহক তাদের সেবা ব্যবহার ছেড়েছেন। বলা হচ্ছে, ভারতী এয়ারটেল ও ভোডাফোন-আইডিয়া লিমিটেডের গ্রাহক সংখ্যা যথাক্রমে ১৫ ও ৫৭ লাখ করে কমেছে। এর পরও ৩৮ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক নিয়ে শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে ভোডাফোন-আইডিয়া।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫