কোরবানি : বগুড়ায় বেড়েছে খামারি, বিক্রি চলছে অনলাইনে

প্রকাশ: আগস্ট ০৪, ২০১৯

এইচ আলিম, বগুড়া

এক বছরের ব্যবধানে বগুড়ায় গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে যুক্ত খামারির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ছয় হাজার। এতে জেলায় এবার কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সরবরাহ বেড়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে হাট জমে না উঠলেও অনলাইনে পশু বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন অনেক খামারি। এতে জেলায় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকলেও বাইরের ক্রেতাদের কাছে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হিসাবে বর্তমানে বগুড়ায় ২৬ হাজার ৯৩০ জন খামারি রয়েছেন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২১ হাজার। এ বছর জেলার খামারিদের কাছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৮০৮টি কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু আছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৬২টি গরু ও ২ হাজার ৪৮টি মহিষ। এবার জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার। সে হিসাবে এবার প্রায় ৫৩ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। গত বছর জেলায় সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪০৫টি পশু কোরবানি দেয়া হয়।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, জেলায় তালিকাভুক্ত খামারের বাইরেও ছোট কিছু খামার রয়েছে, যেখানে দুই থেকে তিনটি গরু আছে। তাদের সঠিক হিসাব নেই। তবে সব মিলিয়ে বলা যায়, জেলায় চাহিদার তুলনায় বেশি গবাদিপশু লালন-পালন করা হয়। বাড়তি পশুগুলো বিভিন্ন জেলায় চলে যায়। সবচেয়ে বেশি যায় ঢাকায়।

স্থানীয় সূত্র ও বিভিন্ন খামারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ায় কোরবানিকে সামনে রেখে বেশির ভাগ বাণিজ্যিকভাবে গরুর খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামারে দেশী জাতের পাশাপাশি ব্রাহমা, হরিয়ানা, পাকিস্তানি ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরুও রয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় পশুহাট বসে বগুড়ার মহাস্থানগড়ে। এছাড়া ঘোড়াধাপ, সুলতানগঞ্জ, শেরপুর, সাবগ্রাম, পল্লীমঙ্গল, কালীতলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক স্থানে হাট বসে। এসব হাটে স্থানীয় খামারির পাশাপাশি আশপাশের জেলার খামারিরা গবাদিপশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। অবশ্য এখনো জেলার হাটগুলো তেমন একটা জমে ওঠেনি। তবে হাট জমে না উঠলেও অনলাইনে বেশ ভালো পশু বিক্রি হচ্ছে।

শখের বশে গরুর খামার গড়ে সফল খামারি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন শহরের সাবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ আলম চঞ্চল (৩৭)। তার খামারে লালন-পালন করা বাংলা ক্রস ব্রাহমা জাতের এক টন ওজনের একটি গরুর দাম হাঁকা হয়েছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা। দরদামের পর ফেসবুকের মাধ্যমে গরুটি বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ টাকায়। গরুটি কিনেছেন রাজধানী ঢাকার এক শিল্পপতি।

খোরশেদ আলম চঞ্চল জানান, ফেসবুকে পেজ খুলে সেখানে বর্ণনা দিয়ে গরু বিক্রি করেন। ঝামেলা কম হওয়ায় হাটে না তুলে অনলাইনে বেশি পশু বিক্রি করেন। এ পর্যন্ত ৩৫টি গরু অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন। এখন তার খামারে আরো ১৫টি বিভিন্ন জাতের গরু আছে।

শিবগঞ্জ উপজেলার চণ্ডীহারার খামারি রাহাত খান জানান, এবার তিনি ১০০টি গরু লালন-পালন করেছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে এরই মধ্যে বেশির ভাগ গরু বিক্রিও করে ফেলেছেন। মূলত ঢাকা ও চট্টগ্রামের ক্রেতারা এসব গরু কিনেছেন।

তবে খামারিদের কেউ কেউ অনলাইনের বদলে হাটে পশু বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদের একজন শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের সাতআনা গ্রামের আবদুল মমিন। তার খামারে এক টন ওজনের বাহাদুর নামের একটি গরু আছে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের এক ব্যক্তি বাহাদুরকে পছন্দ করে ৮ লাখ টাকা দাম বললেও তিনি বিক্রি করেননি। তার আশা, হাটে তুললে গরুটি ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫