মোগলদের সময়ে প্রোথিত হয়েছিল ফারসি ভাষা

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪

মাহমুদুর রহমান

উত্তর ভারতে মোগল শাসন শুরু হয় ষোড়শ শতাব্দীতে। বাবরের দিল্লি জয়ের মাধ্যমে। বাবরের ভাষা ছিল চাগতাই তুর্কি। কিন্তু মোগল দরবারে বিশেষ গুরুত্ব পেত ফারসি ভাষা। এর অন্যতম কারণ ফারসি ভাষার পরিচিতি। মধ্য এশিয়া থেকে আসা মোগলরা এ ভাষাকে গ্রহণ করেছিল। পরিণত করেছিল নিজেদের ভাষায়। দ্বিতীয় কারণ ফারসি ভাষার ব্যপ্তি ও এর সৌকর্য। নিজামি, হাফিজ, জামি, সাদি প্রমুখ কবিদের ভাষা ফারসি। এ ভাষায় রচিত হয়েছে পদ্য ও গদ্য। এমনকি মোগলরা ক্ষমতায় আসার পর তারাও ভারতে ফারসি ভাষায় গদ্য-পদ্যের প্রসারে কাজ করেছেন। ভারতীয় মহাকাব্য, গদ্য ও লোককথা অনূদিত হয়েছে ফারসিতে। ফলে ফারসি ভাষার মধ্য দিয়ে উপমহাদেশে ছড়িয়েছে ইসলামী সংস্কৃতি ও তার নানা অনুষঙ্গ।

পারস্যের কবিতার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে সেখানে দুটো বিষয় থাকে—প্রেম ও বোহেমিয়া এবং ইসলামী সংস্কৃতি। হাফিজ, জামি, সাদির কবিতায় গভীর দর্শন ও সুফিবাদ ছিল। কিন্তু সেসবই উপমহাদেশে আসার পর ইসলামকে এখানে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। উরফি সিরাজির দুটো লাইন উল্লেখ করা যায়—

আরিফ হাম আজ ইসলাম খারাবাস্ত-ও-হাম আহ কুফর

পারওয়ানা চিরাগ-ই-হারম ও দ্যায়র নাদানাদ 

অধাত্ম্য আজ কুফর ও ইসলামের মধ্যেই হারিয়েছে

অথচ পোকা জানে না দীপ মসজিদে জ্বলছে না মন্দিরে


ফারসি ভাষার এ ধরনের উপমা ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়। বর্তমান ভারত ও পাকিস্তানে এ উপমাগুলো ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত পাকিস্তান যে ভূখণ্ডে অবস্থিত সেখানে বহু আগে থেকেই মুসলিমরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেই সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত ইরানের সঙ্গে হওয়ায় ফারসি সেখানে ছিল পরিচিত। দ্রুতই তাই কবিতা, গদ্য ও নানা ভাষ্যের মধ্য দিয়ে এ ভাষা জনপ্রিয় হতে শুরু করে।

এ আলোচনায় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের নাম সবক-এ-হিন্দি। বিষয়টি মূলত হিন্দির সঙ্গে ফারসির যোগসূত্র বা হিন্দির মধ্যে ফারসি প্রবেশের। আজকে হিন্দি বলে যে ভাষাটিকে চিনি, সেখানে ব্যবহৃত অনেক শব্দই উর্দু যার শেকড় ফারসি। এ ঘটনা মূলত মোগল আমলে কবিতা, গদ্য ও দরবারে ব্যবহৃত ফারসির মধ্য দিয়ে ঘটেছিল। ভারতের সঙ্গে বহু আগে থেকেই মধ্য এশিয়া ও পারস্যের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল। সে সময়ও ফারসি ভাষার সংস্পর্শে এসেছে ভারত। ছিল সুলতানি আমলের মুসলিম শাসকদের অবদানও। তবে মোগল শাসনামলে ভাষার প্রসার হয়েছিল সবচেয়ে বেশি।

মোগল ভারতের রাজভাষা ফারসি হওয়ার আগে তারা ফারসি নানা শব্দ ও শব্দবন্ধ ব্যবহার করত। তবে এ ধারা শুরু হয়েছিল মোগলদের আগে। আমির খুসরো ও মাসুদ সাদ সালমানরা তাদের কাব্য ও কথায় ব্যবহার করতেন ফারসি। তৈমুরের ভারত অভিযান থেকে এ সিলসিলা শুরু হয়েছিল বলে অনেকের ধারণা। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরবর্তী সময়ে এ শব্দ, বাক্য ব্যবহার ও ভাবধারাটি ‘ইসলামী’ হিসেবে চিহ্নিত হলেও প্রথমত তা ছিল সাম্রাজ্য বিস্তারের একটি ফল এবং শব্দ বা ভাষার কোনোটিই আরবের ইসলামের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, ছিল পুবের ইসলামের একটি এক্সটেনশন। প্রশ্ন জাগতে পারে, পুবের ইসলাম কী? পুবের ইসলাম মূলত আরবের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন ছিল। আরবে যেভাবে পালিত হতো পূর্বে তা হলো না। এ অঞ্চলে ইসলাম এসেছিল সুফি সাধকদের হাত ধরে। ফলে ইসলামের ধাঁচটা এখানে ছিল অনেকটাই আধ্যাত্মিক ও সহজ।

তৈমুরি সংস্কৃতি থেকে আগত ফারসি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে বিষয়টিকে অনেক সময় তর্জ-এ-হিন্দুস্তানিয়া বলে উল্লেখ করা হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে মোগল আমলের কবিদের মধ্যে এ ধারা দেখা যায় বা তারা যে ধারায় কাজ করেছিলেন সে ধারার এমন নাম দেয়া হয়েছিল। আমির খুসরোর সময় থেকে ‘ইহাম’ নামে একটা ধারার সূচনা হয়। তিনি উপমা দিয়ে কিছু দ্ব্যর্থক কথা বলতেন। সে ধারাকেই ইহাম হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।

তবে মোগল আমলে ফারসি আরো পোক্ত স্থান পায় যখন হুমায়ুন পারস্য থেকে ফেরেন। তিনি শিয়া মতের প্রতি ঝুঁকেছিলেন এমন কথাও প্রচলিত। পারস্যের শাহ তাকে সাহায্য করেছিলেন এবং পারস্যে হুমায়ুনের অবস্থান তাকে পারস্যের সংস্কৃতি ও ফারসির প্রতি আগ্রহী করে তুলেছিল। সেই সঙ্গে মোগল অভিজাতদের অনেকেরই আদি নিবাস পারস্য হওয়ায় তারা এ ভাষায়ই ছিলেন স্বচ্ছন্দ।

হাফিজ সিরাজির একটি কথা আছে, যার অর্থ দাঁড়ায় ভারতের তোতারা পারস্যের ফল নিয়ে যাবে বাংলা পর্যন্ত। ফলে মূলত ভাষা যা কিনা পারস্য থেকে এসে উত্তর ভারত হয়ে চলে গেছে বাংলা পর্যন্ত। সে কারণেই বাংলা ভাষায়ও ব্যবহার হয় ফারসি শব্দ, ভাষায় আছে ফারসির প্রভাব। মোগল শাসনের আগে পঞ্চদশ শতাব্দীতে মালিক মোগম্মদ জায়সীর পদ্মাবতে পাওয়া যায় ফারসির ছাপ। সে সময় থেকেই হিন্দিতে ফারসির প্রবেশ। পরে মুসলিম শাসকরা ক্ষমতায় থাকায় তা পোক্ত হয়।

হুমায়ুনের সঙ্গে আসা পারসিকরা মোগল দরবার ও দরবারের বাইরে ফারসির চর্চা করতেন। পরে বাদশাহ আকবরও পারস্যের সাহায্য নিয়েছিলেন। মোগল আমলের প্রথম পর্যায়ে তিনিই সবচেয়ে বেশি প্রচার করেছেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি। তার শাসনামলে পারস্য থেকে বহু কবি ও লেখক ভারতে এসেছিলেন। তাদের কারো আশা ছিল একটা ভালো ভবিষ্যতের, অনেকে এসেছিলেন পালিয়ে। সাফাভিদের ভয়ে পালিয়ে আসা পারসিকদের সংখ্যা কম ছিল না। বলা বাহুল্য তারা নিজেদের ভাষা নিজেদের ভূখণ্ডে রেখে আসেননি। আকবর এদের কোনো নিজ বাদশাহিতে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি তাদের পৃষ্ঠপোষকতাও করেন।

আকবর তার শাসন সংহত করার পাশাপাশি এটিকে সমৃদ্ধশালী করার ক্ষেত্রেও এদের সাহয্য নেন ও সাহায্য করেন। সাফাভিরা ধর্মীয় মতবাদের ক্ষেত্রে কট্টর অবস্থান নেয় কিন্তু মোগলরা উদারতা দেখিয়েছিল। সে কারণে মোগল ভারতে পারসিকদের জন্য ছিল উচ্চ পদ, বস্তুগত সুখের 

নানা ব্যবস্থান পাশাপাশি সম্মানের নিশ্চয়তা। আকবর বা কোনো মোগল বাদশাহ এমন কোনো ঘোষণা দেননি কিন্তু বিষয়টি এমনই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আকবর এরপর ‘সুল-ই-কুল’ ঘোষণা করেন, ফলে এ নিশ্চয়তা আরো বাড়ে। ফলে সাফাভিদের ভয় থেকে মুক্ত হয়ে আসা পারসিকরাও আকবর ও মোগলদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে শুরু করে। মোগল দরবারে পায় পদ-পদবি। ফলে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিও ছড়াতে শুরু করে।

আকবরের দরবারে বহু ইরানি অমাত্য ছিলেন, যারা পারস্যের সঙ্গে মোগল দরবারের সদ্ভাব বজায় রাখতে কাজ করেছেন। খেয়াল করলে দেখা যাবে আকবরের শাসনামলে পারস্যের সঙ্গে মোগলদের কোনো সংঘাত হয়নি। জনপ্রিয় ধারা থেকে জানা যায় আকবরের দরবারে পারস্যের অনেকে এসেছেন এবং আকবর তাদের স্থান দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে আকবর স্বয়ং পারস্যের অনেক প্রতিভাবানকে আহ্বান করতেন এবং এ কারণে পারস্যের শাহর হাতে সেসব প্রতিভাবানদের লাঞ্ছিত হওয়ারও ইতিহাস আছে। আকবরের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল পারস্যের অধ্যাত্মবাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া। সেক্ষেত্রে পারস্যের অধ্যাত্মবাদ বা সুফিজমের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ বেশ পুরনো এবং আকবরের সময় তার ব্যাপ্তি বাড়ে। তিনি ইবাদতখানা স্থাপন করে সেখানে বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিতদের নিয়ে আলোচনা করতেন। সেখান থেকে অনেক কিছু গ্রহণও করেছিলেন।

অন্যদিকে তিনি অনুবাদ করান বহু বই। শুরু হয়েছিল ‘বাবুরনামা’ দিয়ে। এরপর মহাভারত, রামায়ণ, লীলাবতী, নল-দময়ন্তীও অনুবাদ করিয়েছেন ফারসি ভাষায়। আবার ফারসি থেকে নিজামির পঞ্চ-গঞ্জ, খামসা, হফত পয়কর প্রভৃতি অনুবাদ করান হিন্দিতে। ফলে ফারসি ও মুসলিম সংস্কৃতির অনেক কিছু ঢুকে পড়ে হিন্দিতে। অন্যদিকে বৈরাম খানের পুত্র আবদুর রহীম, আবুল ফজল, ফৈজী প্রমুখ অমাত্য তাদের লেখালেখিতে ফারসিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পরে উর্দু যখন গড়ে ওঠে এবং দাগ, যওক, গালিব প্রমুখ কবিরা কবিতা লিখতে শুরু করেন বা আবদুল হালিম শরর গদ্য লেখেন, সে সময় উর্দুকে তারা গ্রহণ করেন, যার মধ্যে ফারসি শব্দ ও ভাষার ভাব ছিল প্রবল।

ফারসির সঙ্গে জুড়ে আছে আরবি আর ফারসিকে গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আরবি শব্দ ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলা ভাষায় একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ—হাকিম নড়ে তবু হুকুম নড়ে না। এখানে হাকিম ও হুকুম দুটোই আরবি শব্দ। ফারসির মধ্য দিয়ে তা বাংলায় এসেছিল ধীরে ধীরে। এমন বহু শব্দই ব্যবহার করা হয়। আরো একটা উদাহরণ দেয়া যাক। এ সময়েও বাংলাদেশে বহু মানুষের নাম পাওয়া যাবে সুলতান। মূলত সুলতান ছিল ইসলামী শাসকের ‘টাইটেল’। শরিয়তি পন্থায় সালতানাতের প্রধান সুলতান। কিন্তু সুলতানি আমল বা এরপর সুলতান শব্দটি শাসক, স্থানীয় শাসক থেকে শুরু করে একসময় মানুষের নামে পরিণত হয়।

বাদশাহ আকবর সাংস্কৃতিক বিস্তার ও সংস্কৃতি নিয়ে আগ্রহী ছিলেন। আরেকটি বিষয় হলো তার অক্ষরজ্ঞান না থাকায় (ডিজলেক্সিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে অক্ষর চিনতে পারতেন না) তিনি সব শুনে শুনে শিখেছেন। শেখা বা শোনার জন্য যেকোনো ভাষার টেক্সটই তার জন্য অনুবাদ হওয়া জরুরি ছিল। এছাড়া মোগল বংশ তুর্কিতে কথা বললেও দরবারে থাকা অমাত্যদের জন্য প্রয়োজন ছিল একটি ‘লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা’ এবং ফারসিই এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো বিবেচিত হয়েছিল। এ সময় থেকে ফারসি পরিণত হয় দরবারের সরকারি ভাষায় এবং পরে তার পুত্র জাহাঙ্গীর রীতিমতো ফারসিতেই লিখেছেন তার স্মৃতিকথা। এছাড়া ফারসি কবিতা, গজলের তিনি ছিলেন একজন সমঝদার ও সমালোচক। জায়সীর ‘পদ্মাবত’ তারই জন্য ফারসিতে অনুবাদ করা হয়েছিল।

দরবারের ভাষা হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই দিনে দিনে ফারসি হয়ে উঠতে শুরু করে রাজ্যের ভাষা। মোগল সাম্রাজ্যের অভিজাতরা যখন ফারসিকে আপন করে নিলেন তখন সাম্রাজ্যের শিক্ষক, বণিক ও অন্যরাও ফারসিকেই নিজেদের যোগাযোগের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। আগে যেখানে দাপ্তরিক কাজ, নথিপত্র হিন্দিতে লেখা হতো এ সময় থেকে তা লেখা শুরু হয় ফারসিতে। দলিল, নথি যখন থেকে ফারসিতে লেখা শুরু হয় তখন মানুষের মুখের ভাষা বাদ দিয়ে সবখানেই গুরুত্ব পেতে শুরু করে পারস্যের এ ভাষা। তবে পারস্যের ফারসি অবশ্যই ভারতে এসে ভারতীয় একটা চেহারা ধারণ করে তা বলাই বাহুল্য। মোগল শাসন শেষ হওয়ার ১৫০ বছর পরও তার প্রভাব দেখা যায়।

আমাদের দেশের আইন ও বিচার বিভাগে ব্যবহৃত বহু শব্দ ‘ইসলাম-ঘেঁষা’ বলে মনে করেন অনেকে। বস্তুত শব্দগুলো ইসলামের সঙ্গে না, আরবির সঙ্গে যুক্ত। তবে ইসলাম যেহেতু আরব থেকে এসেছিল, তাই আরবির কারণেই ইসলামের সঙ্গে ভাষা যুক্ত মনে হয়। দেওয়ানি, ফৌজদারি, তালুক, খাস, সাফ কবালা ইত্যাদি শব্দ মূলত মোগল আমলে তৈরি হওয়া আইনে থাকা ফারসি থেকে উৎসারিত। এসব শব্দ মোগল দপ্তর থেকে নথি ও দলিলের মাধ্যমে ঢুকেছে প্রশাসনে। এছাড়া সে সময়ে যে কাব্য ও গদ্য লেখা শুরু হয়েছিল তার মাধ্যমেও ছড়িয়েছে। স্থানীয় শাসক এমনকি সাহিত্যিকরা কখনো স্বেচ্ছায় কখনো প্রচলিত শব্দ ও ভাষা গ্রহণ করেছেন অবচেতনে। এভাবেই মোগল আমলে ফারসি ও আরবির মধ্য দিয়ে ইসলামী ভাবধারার ভাষা প্রবেশ করেছে উপমহাদেশে।

মাহমুদুর রহমান: লেখক ও সাংবাদিক


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৮১৮০১৯৩-৪ (বিজ্ঞাপন), ৮১৮০১৯৬-৭ (সার্কুলেশন)

ই-মেইল: [email protected]