দুদিন পর ঊর্ধ্বমুখী ধারায় সূচক

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ পরিস্থিতির আরো অবনতি নিয়ে আশঙ্কা কাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। সংক্রমণ রুখতে সরকার ঘোষিত সার্বিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরো বাড়লে অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কাও রয়েছে। তার ওপর ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরে পতন হয়েছে। এসব মিলিয়ে গত দুই কার্যদিবস ধরেই দরপতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। তবে গতকাল দুই দিনের পতনের ধারা কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশকিছু বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বর্তমানে কম থাকায় বিনিয়োগকারীরা সেগুলো কিনে রেখেছেন। তাছাড়া ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা ৬৬টি কোম্পানির সার্কিট ব্রেকারের নিম্নসীমা শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়ার কারণে এগুলোর দর অন্যান্য শেয়ারের তুলনায় কম কমবে। বিষয়টিও বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিনতে উৎসাহিত করেছে। ফলে সার্বিকভাবে গতকাল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনার প্রবণতা ছিল বেশি। যার প্রভাবে পুঁজিবাজারে সূচক লেনদেন বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুর পর আধা ঘণ্টা টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। এরপর সূচকে কিছুটা ছন্দপতন হলেও দিনশেষে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ২৪ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ১৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল হাজার ১৬৫ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন, পূবালী ব্যাংক ব্র্যাক ব্যাংকের।

ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে হাজার ১৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ১৭৮ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে প্রায় পয়েন্ট কমে গতকাল হাজার ৯৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৯৫৩ পয়েন্টে। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে মোট ৪৯৪ কোটি ৩০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৫টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৫৮টির, কমেছে ১১১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৬টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে সাধারণ বীমা খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক ৪৪ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। আর দশমিক ৭৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, রবি আজিয়াটা, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, জিবিবি পাওয়ার, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, সোনার বাংলা ইন্সুরেন্স, বিডি ফাইন্যান্স কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, আরএকে সিরামিকস, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ, ন্যাশনাল ফিড মিল, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামী মিউচুয়াল ফান্ড, জিবিবি পাওয়ার, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।

অন্যদিকে ডিএসইতে গতকাল সবচেয়ে বেশি দর কমেছে ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স, এনভয় টেক্সটাইল, লিবরা ইনফিউশন, মতিন স্পিনিং মিলস, তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, রানার অটোমোবাইলস, বিএসআরএম স্টিল, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ১৫ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৪০ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২০০টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৯টির, কমেছে ৭৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন