বরখাস্ত হলেন ক্রিকেট দলের হেড কোচ হাথুরুসিংহে

চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় দলের লংকান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

হাথুরুর জায়গায় ক্রিকেট দলের অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচের দায়িত্ব পালন করবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্স। ২১ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ শুরু হবে বাংলাদেশের।

চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় দলের লংকান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আজ মঙ্গলবার বিকালে এক ঘোষণায় এ সিদ্ধান্তের কথায় জানিয়ে দেয় বিসিবি।

হাথুরুসিংহের জায়গায় ক্রিকেট দলের অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচের দায়িত্ব পালন করবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্স। ২১ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ শুরু হবে বাংলাদেশের। প্রথম টেস্ট মিরপুরে, এরপর ২৯ অক্টোবর দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।

আজ সংবাদ সম্মেলনে ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘বরখাস্ত করার আগে আমরা তাঁকে (হাথুরুসিংহে) নিয়ম মেনে শোকজ নোটিশ করেছি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স।’ বিসিবি সভাপতি আরো বলেছেন, ‘দুই তিনটি ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো আসলে একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্য খুব পীড়াদায়ক ছিল। পাশাপাশি এটা দলের জন্যও খুব একটা ভালো উদাহরণ ছিল না। সেগুলো বিবেচনা করে আজ আমরা তাঁকে একটা কারণ দর্শাও নোটিশ এবং দায়িত্ব থেকে অব্যহতির চিঠি দিয়েছি।’

বাংলাদেশের সঙ্গে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত চুক্তি ছিল হাথুরুসিংহের। যদিও বিসিবির নতুন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পরই ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, লংকান কোচকে বাদ দেয়া হবে। পাকিস্তানের মাঠে ক্রিকেট দল ২-০তে টেস্ট সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়লে চাকরিটা বেঁচে যায় কোচের। এরপর ভারত সফরে তার কোচিংয়েই টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। যদিও ওই সফরে পাঁচ ম্যাচের সবগুলোতেই হেরেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এই ফলাফলেই চাকরিটা গেল তার।

চুক্তির মেয়াদ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত থাকলেও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। মঙ্গলবার হঠাৎ করেই সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ কথা জানিয়ে নেন ফারুক আহমেদ।

দুই দফায় বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন হাথুরুসিংহে। প্রথম দফায় ২০১৪ সালের জুনে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব নেন তিনি। তার দুই বছরের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। যদিও ২০১৭ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথেই পদত্যাগ করেন তিনি। এমনকি ঢাকায় না ফিরেই তিনি ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।

গত বছরের ৩১ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় তাকে কোচ নিয়োগের কথা জানায় বিসিবি। চুক্তিটা ছিল দুই বছরের। যদিও মেয়াদ পূর্ণ করা হলো না। প্রথম দফায় চাকরি ছাড়েন নিজে, এবার হলেন বরখাস্ত।

দ্বিতীয় দফায় হাথুরুর কোচিংয়ে ১০ টেস্ট, ৩৫ ওয়ানডে ও ৩৫ টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্টে জয়-হার সমান ৫টি করে। ওয়ানডেতে জয় এসেছে ১৩টি, হার ১৯টি, পরিত্যক্ত তিন ম্যাচ। টি-টোয়েন্টিতে জয় ১৯টি, হার ১৫টি, পরিত্যক্ত এক ম্যাচ।

হাথুরুর অধীনে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। সেই থেকে চাপ বাড়ে কোচের ওপর। ফারুক আহমেদ বিসিবির নতুন সভাপতি হয়েই হাথুরুকে ছাঁটাইয়ের ইচ্ছার কথা জানান। তিনি সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলেন।

আরও