প্রযুক্তির বিবর্তনে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে বিশ্ব। প্রযুক্তি খাতের একেকটি উদ্ভাবন একেকটি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে, সেই সঙ্গে বদলে দিচ্ছে মানুষের কাজ ও যোগাযোগের ধরন। এর মধ্যে কিছু প্রযুক্তি আছে, যেগুলোর কারণে মানুষের বাস্তবতা উপলব্ধি করার ধরনও পাল্টে দিচ্ছে। এ ধরনের প্রযুক্তির তালিকায় এরই মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে অগমেন্টেড রিয়ালিটি (এআর) ও ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (ভিআর)। এ দুই প্রযুক্তি গেমিং, বিনোদন, স্বাস্থ্যসেবা, পর্যটন, যোগাযোগ ও পণ্যের উৎপাদন-বিপণনের পাশাপাশি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে শিক্ষা খাতেও। গবেষকরা বলছেন, শিক্ষায় এআর-ভিআরের যেভাবে প্রসার ঘটছে, তাতে এ খাতে প্রযুক্তি দুটির বাজার ২০৩২ সালের মধ্যে ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
ভিআর ও এআর উভয় প্রযুক্তিই থ্রিডি চিত্রের মাধ্যমে ‘কৃত্রিম বাস্তবতার’ উন্নত অভিজ্ঞতা প্রদান করে, তবে কাজের পদ্ধতি অনেকটাই ভিন্ন। ভার্চুয়াল রিয়ালিটি সম্পূর্ণভাবে একটি ডিজিটাল জগতে নিয়ে যায়। সাধারণত হেডসেট পরে সেখানে প্রবেশ করা যায়। আর অগমেন্টেড রিয়ালিটি বাস্তব জগতের ওপর ডিজিটাল তথ্য যুক্ত করে।
স্মার্টফোন থাকলে যে কেউই অগমেন্টেড রিয়ালিটি ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে অগমেন্টেড রিয়ালিটির একটি উদাহরণ হতে পারে ‘আইকিয়া প্লেস অ্যাপ’। এটি ব্যবহারকারীকে নিজের বাড়িতে ফার্নিচারের থ্রিডি মডেল স্থাপন করে দেখাতে সক্ষম। স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই অগমেন্টেড রিয়ালিটির সঙ্গে পরিচিত, কিন্তু তারা হয়তো বুঝতে পারেন না যে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। এখানে অনেক ফিল্টার রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে পরিবেশের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করে অ্যানিমেশন বা ইফেক্ট যোগ করা যায়।
শিক্ষা খাতে এআর ও ভিআরের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে গত সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান মার্কেটস অ্যান্ড মার্কেটস। তাতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে শিক্ষা খাতে এ দুই প্রযুক্তির বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল ১ হাজার ৪৫৫ কোটি ডলার। ২০২৪ সাল শেষে এটি দাঁড়াতে পারে ১ হাজার ৭১৮ কোটি ডলারে। ২০৩২ সালে এটি বেড়ে দাঁড়াবে ৬ হাজার ৫৫৫ কোটি ডলারে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হবে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ।
ভিআর হলো পুরোপুরি ভার্চুয়াল এক জগৎ। এখানে বাস্তব জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একজন ব্যক্তি অন্য একটি জগতে প্রবেশ করেন।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্রান্ড ভিউ রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে ভিআর পণ্যের বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল ১ হাজার ৫৮১ কোটি ডলার। কিন্তু ২০২১-২০২৮ সাল পর্যন্ত এর আকার প্রতি বছর গড়ে ১৮ শতাংশ করে বাড়বে।