টেক জায়ান্ট অ্যাপল ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আইফোন বিক্রি থেকে আয় করেছে ৪ হাজার ৬২০ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪ হাজার ৩৮০ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে কোম্পানিটির জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আয় ৬ শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার ৪৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। অ্যাপলের আয়ের এ প্রতিবেদন ওয়াল স্ট্রিটের ৯ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য বেশি। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত অ্যাপলের প্রতিবেদন বলছে, তৃতীয় প্রান্তিকে আইফোন ১৬-এর চাহিদা ছিল জোরালো, তবে চীনে ডিভাসটির বিক্রি গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। কোম্পানির চতুর্থ প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সাবস্ক্রিপশন অন্তর্ভুক্ত পরিষেবা বিভাগের আয় ২ হাজার ২৩১ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ২ হাজার ৪৯৭ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, অ্যাপলের আয়ের প্রতিবেদনটি সেপ্টেম্বরে মুক্তি পাওয়া আইফোন ১৬-এর জনপ্রিয়তা তুলে ধরেছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) বিশ্লেষকদের মতে, নতুন আইফোনটি আগামী প্রান্তিকগুলোয় চীনে অ্যাপলের বাজার হিস্যা ফিরিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে। আগের প্রান্তিকে চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ে ও শাওমির শক্তিশালী প্রতিযোগিতার কারণে অ্যাপল স্মার্টফোন বিক্রেতাদের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে নেমে যায়। আইডিসি ও বাজার গবেষণা সংস্থা ক্যানালিস বলছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে স্মার্টফোন বিক্রির দিক থেকে এবার স্যামসাংয়ের পর দ্বিতীয় স্থানে আছে অ্যাপল।
এদিকে এক বিবৃতিতে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক কোম্পানির ‘সেরা পণ্য’ হিসেবে আইফোন ১৬ অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে আমরা অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের প্রথম ফিচারগুলো প্রকাশ করেছি। নতুন ফিচারগুলোয় ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ছুটির মৌসুম হওয়ায় পরিষেবাটি আরো বেশি গ্রাহক আকর্ষণ করতে সাহায্য করবে।’ তবে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স এ মৌসুমে তাদের পণ্যের বিক্রি বাড়াবে কিনা সে বিষয় বিস্তারিত জানায়নি কোম্পানিটি।
অ্যাপলের প্রধান অর্থবিষয়ক কর্মকর্তা লুকা মায়েস্ত্রি বলছেন, তারা নতুন সব পণ্য ও ফিচার চালু করার যাত্রায় শুরুর দিকে আছেন। তিনি এ নতুন উদ্ভাবনগুলো নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘তবে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের উন্মোচন সময়ের সঙ্গে হবে। এটি সাধারণ সফটওয়্যার মুক্তির মতো একসঙ্গে হবে না।’ কুক বলছেন, কোম্পানিটি ডিসেম্বর ও আগামী কয়েক মাসে আরো ফিচার চালুর পরিকল্পনা করছে এবং ভবিষ্যতে আপডেটগুলো অনেক বেশি উন্নত হতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের তথ্যানুযায়ী, গত বছর অ্যাপলের অন্যান্য ডিভাইসের চাহিদা কম থাকায় কোম্পানিটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এর ফলে অ্যাপল ওয়াচ ও এয়ারপডের মতো পরিধানযোগ্য ডিভাইসের বিক্রি টানা চার প্রান্তিকে কমেছে। এদিকে প্রায় এক দশকের মধ্যে অ্যাপলের চলতি বছর প্রকাশিত নতুন হার্ডওয়্যার পণ্য ভিশন প্রো হেডসেট খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি।