বলিভিয়ায় হামলা করে সামরিক ঘাঁটি দখল, ২০০ সেনা অপহরণ

সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের সমর্থকরা বলিভিয়ায় ২০০ জনেরও বেশি সৈন্যকে জিম্মি করেছে বলে দাবি লাতিন আমেরিকার দেশটির সরকারের। বলিভিয়া সরকার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার (৩ নভেম্বর) একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করে সশস্ত্র হামলাকারীরা সেই ঘাঁটি দখল করে প্রায় ২০০ সৈন্যকে জিম্মি করেছে। খবর এপি।

বলিভিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে সৈন্যদের জিম্মি করায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও গোলাবারুদ চুরির অভিযোগ করেছে। তবে বিবৃতিতে গোষ্ঠীগুলোর পরিচয় বা কীভাবে সৈন্যদের জিম্মি করা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। এর একদিন আগে প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সে বলেছিলেন যে, যারা প্রতিবাদ করছে এবং সামরিক ইউনিটগুলোতে আক্রমণ করছে তারা মোরালেসের সমর্থক।

আর্সে কেন্দ্রীয় বলিভিয়ার কোকা চাষ অঞ্চলগুলোর তিনটি সামরিক ব্যারাক দখলের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত নিন্দনীয় অপরাধমূলক কাজ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা আদিবাসী কৃষক আন্দোলনের কোনো বৈধ সামাজিক দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

তিন সপ্তাহ আগে বলিভিয়ার কৌঁসুলিরা ইভো মোরালেসের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে— ২০১৬ সালে মোরালেস ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, যাকে আইনি ভাষায় ধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মোরালেস আদালতে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

মোরালেসের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য গ্রেফতারি পরোয়ানার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তিনি বলিভিয়ার কেন্দ্রস্থল চাপারে অঞ্চলে অবস্থান করছেন। সেখানে তার অনুগত কোকা চাষীরা তাকে গ্রেফতার হওয়া থেকে বাধা দিতে নজরদারি চালাচ্ছে। মোরালেসের সমর্থকরা পুলিশ ও সামরিক ব্যারাক দখলেরও হুমকি দিয়েছে। তাদের দাবি, মোরালেসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করা হোক।

ইভো মোরালেসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের তদন্তের ফলে সৃষ্ট অস্থিরতার তৃতীয় সপ্তাহে ঘটল এ ঘটনা।

গত সপ্তাহে নিরাপত্তা বাহিনী ও মোরালেসের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ৩০ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন এবং ৫০ জনেরও বেশি প্রতিবাদকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সের অনুসারীদের সঙ্গে মোরালেসের সমর্থকরা বেশ কয়েকটি ঘটনায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় ব্যক্তিই দেশটির ২০২৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মাস দলের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।

২০০৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ইভো মোরালেস। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর পদত্যাগে বাধ্য হন মোরালেস।

আরও