যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফল বিশ্ব সংঘাত এবং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ ফলাফলে ইউক্রেন, গাজা ও বৈশ্বিক সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা পরিবর্তিত হয়ে এর ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। খবর বিবিসি।
ইউক্রেন থেকে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত অনেক অঞ্চলেই মার্কিন নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর নীতিগত অবস্থানের পার্থক্য স্পষ্ট। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘গ্লোবালিজম নয়, আমেরিকানিজম’ নীতির ওপর গুরুত্ব দিতে চান। ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী অবস্থান বজায় রাখার পাশাপাশি ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদান এবং গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে এ নির্বাচন ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
ন্যাটোর সাবেক উপ-সচিব রোজ গোত্তেমোয়েলারের মতে, ট্রাম্পের পুনরায় নির্বাচিত হওয়া ইউরোপের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যেখানে ন্যাটো থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে তার আগের হুমকি সবাইকে আতঙ্কিত করেছিল। হ্যারিস জয়ী হলে ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত অবস্থান থাকবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এল্ডার্সের চেয়ার মেরি রবিনসন মনে করেন, ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এলে জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্পের জলবায়ু কর্মসূচির বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি আর ইউএসের পরিবেশগত রূপান্তর থামাতে পারবেন না। তিনি হ্যারিসকেও জলবায়ু নেতৃত্বে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের অধীনে মানবিক বিষয়ক ও জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার আলোকে মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, হ্যারিস জয়ী হলে শান্তির সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তবে তিনি বাইডেন প্রশাসনের ‘দ্বিধাগ্রস্ত’ ভূমিকারও সমালোচনা করেন, যা গাজার বেসামরিক নাগরিকদের দুর্দশা কমাতে কার্যকর ছিল না।
চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এ নির্বাচন থেকে প্রভাবিত হতে পারে। কারণ ট্রাম্প চীনা পণ্য আমদানির ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। এটিকে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হিসেবে অভিহিত করেছেন চীনের শীর্ষস্থানীয় পণ্ডিত রানা মিটার।
সবমিলিয়ে বিশ্লেষকরা মনে করেন, বর্তমান বিশ্বে মার্কিন নেতৃত্বের নৈতিকতার ওপর আস্থা কিছুটা ক্ষুণ্ণ হলেও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য এর ভূমিকা এখনো অপরিহার্য।