১৯৯২ সালে বিল ক্লিনটনের কৌশলবিদ জেমস কারভিল বলেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পুরো বিষয়টাই সবসময় অর্থনীতি বিষয়ক।
আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে যারা অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে অর্থনীতিকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন এবং মোট ভোটারের অর্ধেক যারা বলেছিলেন, তারা চার বছর আগের চেয়ে বর্তমানে আর্থিকভাবে আরো খারাপ অবস্থায় আছেন, তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ছিল একেবারেই স্পষ্ট— রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ফক্স নিউজের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করার পরে নিজেকে বিজয় ঘোষণা করেছেন। ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা এবং জর্জিয়ায় জয়ী হয়েছেন তিনি।
বাকি চারটি ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যের প্রতিটিতেই এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প, যেগুলোর মধ্যে কোনো একটিতে জয়ী হলেই তার ইলেকটোরাল কলেজের মোট ভোট ২৭০-এর বেশি হবে, যা তার হোয়াইট হাউস গমন নিশ্চিত করবে।
জাতীয় এক্সিট পোল ডেটা অনুসারে, প্রায় ৩১ শতাংশ ভোটার বলেছিলেন যে, অর্থনীতি তাদের প্রধান সমস্যা। এরচেয়ে বেশি ৩৫ শতাংশ ভোটারের কাছে গণতন্ত্রের পরিস্থিতি ছিল প্রধান ইস্যু। যারা অর্থনীতিকে তাদের প্রধান উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তাদের ৭৯ শতাংশই ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন, যেখানে এই অর্থনীতি নিওয়ে চিন্তিত মাত্র ২০ শতাংশের ভোট গেছে কমলার পক্ষে।
এদিকে, গত কয়েক বছরের উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোটারদের স্পষ্ট উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ভোটারদের ট্রাম্পের দিকে টেনেছে। ভোটারের অর্ধেকেরও বেশি বলেছেন যে, গত এক বছরে মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের বেশ খানিকটা আর্থিক কষ্ট হয়েছে। এছাড়া, প্রায় এক-চতুর্থাংশ বলেছেন, মূল্যস্ফীতি তাদের জন্য সবচেয়ে বড় কষ্টের কারণ।
যারা মূল্যস্ফীতিকে তাদের ‘কিছুটা কষ্টের কারণ’ বলেছেন, তাদের ৫০ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর ৪৭ শতাংশ দিয়েছেন কমলাকে।
অন্যদিকে, যারা মূল্যস্ফীতিকে ‘বড় কষ্ট’ হিসেবে বিবেচনা করেছেন, তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশই ভোট দিয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে।
এডিসনের এক্সিট পোলিং ডেটা দেখিয়েছে যে, দেশজুড়ে ৪৫ শতাংশ ভোটার বলেছিলেন যে, তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা আজ থেকে চার বছর আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। ২০২০ সালে এই পরিসংখ্যান ছিল মাত্র ২০ শতাংশ। এই ভোটারদের মধ্যে ৮০ শতাংশই ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। আর মাত্র ১৭ শতাংশ দিয়েছেন কমলাকে।
নির্বাচনের ফলাফলগুলো সেই জরিপগুলোর সঙ্গে মিলে যায় যেখানে দেখানো হয়েছে যে, মার্কিন অর্থনীতিকে খারাপ রেটিং দিয়েছে গ্রাহকরা। যদিও বেকারত্ব এখন দেশটিতে ঐতিহাসিক পর্যায়ে কম, মোট অর্থনৈতিক বৃদ্ধিও গড় প্রবৃদ্ধির উপরে, ভোক্তা ব্যয় শক্তিশালী, এবং মোট আবাসন সম্পদ রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে।