গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করার জন্য ইসরায়েলকে ৩০ দিনের সময় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যথায় সামরিক সহায়তা কাটছাঁটের ঝুঁকি রয়েছে বলে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন। খবর বিবিসি।
গত রোববার (১৩ অক্টোবর) পাঠানো এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র ইসরায়েলকে এই সতর্কবার্তা জানিয়েছে। আর এই চিঠিকে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী লিখিত সতর্কবার্তা হিসাবে দেখা হচ্ছে। গাজার উত্তরে নতুন করে ইসরায়েলি আক্রমণে যখন বহু সংখ্যক বেসামরিক লোকের হতাহতের খবর আসছে তখনই ইসরায়েলকে চিঠি দিল যুক্তরাষ্ট্র।
চিঠিতে বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এছাড়া, গত মাসে ইসরায়েল গাজার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মানবিক চলাচলকে বাধা দিয়েছে।
ইসরায়েল এই চিঠি পর্যালোচনা করছে। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নেয়া হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগীদের সঙ্গে উত্থাপিত উদ্বেগের সমাধান হবে বলেও ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ইসরায়েল আগেও বলেছে যে, তারা গাজার উত্তরে হামাস সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করছে এবং মানবিক সহায়তার প্রবেশ বাধাগ্রস্ত করছে না।
গত সোমবার গাজায় ক্রসিং পরিচালনার জন্য দায়ী ইসরায়েলি সামরিক সংস্থা কোগাত জানিয়েছে যে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ৩০টি লরি সহায়তা নিয়ে উত্তর গাজায় এরেজ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করেছে।
এর আগে জাতিসংঘ বলেছিল, উত্তরে কোনো ধরনের খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়নি এবং সেখানে ৪ লাখ ফিলিস্তিনির বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও অন্যান্য সরঞ্জাম শেষ হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানান, গাজা এখনো স্থায়ী চূড়ান্ত জরুরি অবস্থায় রয়েছে।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান আতোয়ান রেনার্ড বলেছেন, ওই অঞ্চলের মানুষ সম্পূর্ণভাবে সহায়তার ওপর নির্ভর করছে এবং প্রায় তাজা খাদ্যের কোনো প্রবেশাধিকারই সেখানে নেই। শুধুমাত্র জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সরবরাহকৃত খাদ্যই তাদের ভরসা।
এদিকে ইসরায়েল সরকারের কাছে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের এই চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টও নিশ্চিত করেছে। এই চিঠিতে সই করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
এতে বলা হয়েছে, আমরা এখন গাজার অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গভীর উদ্বেগ জানানোর জন্য লিখছি এবং এই পরিস্থিতি বদলের জন্য এ মাসেই আপনার সরকারের কাছ থেকে জরুরি এবং টেকসই পদক্ষেপ চাই।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, এলাকা খালি করার ইসরায়েলি আদেশ ১৭ লাখ বাসিন্দাকে উপকূলীয় আল-মাওয়াসি এলাকায় যেতে বাধ্য করেছে। সেখানে চরম ভিড়ের কারণে মারাত্মক সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। মানবিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এসেছে যে, তাদের বেঁচে থাকার মতো প্রয়োজন মেটানো যাচ্ছে না।