বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ভ্যালেন্সিয়া পরিদর্শনে গিয়েছিলেন স্পেনের রাজা ও রানি। কিন্তু বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের দিকে কাদা ও পাথর ছুড়েছে। ভ্যালেন্সিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পাইপোর্টা শহর পরিদর্শনে গিয়ে এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফেলিপে এবং রানি লেটিজিয়া। সেখানে হাঁটার সময় রাজদম্পতি এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য নেতাদের উদ্দেশে ‘খুনি’ এবং ‘লজ্জা লজ্জা’ বলে চিৎকার করে বিক্ষুব্ধরা। খবর বিবিসি।
রাজা ফেলিপে এবং রানি লেটিজিয়ার মুখ ও পোশাকে কাদা লেগে থাকতে দেখা যায়। তারা বিক্ষুব্ধ জনতার দিকে এগিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন ও সান্ত্বনা দেন।
স্পেনে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই বন্যায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। জরুরি উদ্ধারকর্মীরা এখনো জীবিতদের খোঁজ এবং মরদেহ উদ্ধারের আশায় ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্ক ও সুড়ঙ্গগুলোতে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
বন্যার পর যথাযথ সতর্কতা ও কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত সহায়তার অভাবে ক্ষুব্ধ জনগণের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। ফুটেজে দেখা যায়, রাজা ফেলিপে পায়ে হাঁটার কর্দমাক্ত একটি পথ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তার দেহরক্ষী এবং পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীদের ঢল সামলাতে হিমশিম খেয়ে যান। তারা রাজার চারপাশে সুরক্ষাবলয় ধরে রাখার চেষ্টা করলেও কিছু প্রতিবাদকারী রাজার দিকে কাদা ও অন্যান্য বস্তু নিক্ষেপ করতে থাকে।
রাজা বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং কয়েকজনকে আলিঙ্গন করে সান্ত্বনাও দেন। ছবিতে দেখা যায়, রাজা, রানী এবং তাদের সঙ্গীদের মুখ ও পোশাকে কাদা লেগে আছে। রানি লেটিজিয়া এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং ভ্যালেন্সিয়ার আঞ্চলিক সরকারের প্রধান কার্লোস মাহন রাজদম্পতির সঙ্গে পরিদর্শনে যোগ দেন। কিন্তু জনতা ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে তাদের দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়।
স্পেনের গণমাধ্যম জানিয়েছে, সানচেজের দিকেও নানা বস্তু ছোড়া হয়েছিল। তার গাড়ির দিকে পাথর ছুড়ে মারেন কয়েকজন। এরপর তাকে দ্রুত এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। পেদ্রো সানচেজের গাড়ি চলে যাওয়ার পর, জনতা স্লোগান দেয়, সানচেজ কোথায়!
ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশের আরেক ক্ষতিগ্রস্ত শহর চিভা পরিদর্শনের পরিকল্পনাও ছিল রাজদম্পতির। তবে পরিস্থিতি বিচারে সেই পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
রাজা পরে রাজপ্রাসাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক ভিডিওতে প্রতিবাদকারীদের ‘রাগ ও হতাশা’ বুঝতে পেরেছেন বলে জানান।