কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প—সে সিদ্ধান্ত নিতে আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ। নির্বাচনে জয়ী হলে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৮ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে ট্রাম্প জিতলে দ্বিতীয়বারের মতো বসবেন ক্ষমতার মসনদে। তবে সর্বশেষ জনমত জরিপে বলা হয়েছে, এবার দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। তবে ভোটগ্রহণ শুরুর সময়কাল প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই ভিন্ন ভিন্ন। আর এরপরই মিলবে চূড়ান্ত ফল।
সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশটির প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে ভোটদানের এই সময়কাল ভিন্ন। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে নির্বাচনের দিন সশরীরে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা থাকে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছিল ৩ নভেম্বর। আর এ বছরের ক্ষেত্রে দিনটি ৫ নভেম্বর।
সশরীরে ভোটদানের সুযোগের পাশাপাশি বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে ডাকযোগেও ভোটের ব্যবস্থা থাকে। এই পদ্ধতিতে ভোটাররা মূলত চিঠির মাধ্যমে পূরণকৃত ব্যালট পেপার পাঠাতে পারেন অথবা কোনো সুনির্দিষ্ট ড্রপ-অফ স্থানে তা জমা দিয়ে যেতে পারেন। বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোটেরও ব্যবস্থা থাকে। আগাম ভোটদানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে বা ডাকযোগে এরই মধ্যে ৮১ মিলিয়নেরও বেশি বা ৮ কোটি ১০ লাখেরও বেশি আমেরিকান ভোট দিয়েছেন।
সাধারণত, যেসব অঙ্গরাজ্যের ভোট দ্রুত গণনা হয়, সেসব স্টেটের ফল রাতেই পাওয়া যেতে পারে। প্রতিটি অঙ্গরাজ্য নিজেদের নিয়ম অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর শুরু হয় ভোট গণনা। তবে সাধারণত অঙ্গরাজ্য ভেদে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোট গণনা শুরু হতে পারে। মূলত সময়ের ব্যবধানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ভোট গণনার সময়ে পার্থক্য দেখা যায়।
ফেডারেল রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালের নির্বাচনে মেইল-ইন ভোট ৪৩ শতাংশেরও বেশি ছিল। যা ২০১৬ ও ২০১৮ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। এই বিশাল পরিমাণ মেইল-ইন ভোট গণনা করতে রাজ্যগুলোতে সময় লেগেছিল, যা নির্বাচনি প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল।
ইয়ারগেইন বলেন, অনেক রাজ্য আইন অনুযায়ী মেইল-ইন ব্যালট খোলা বা স্বাক্ষর যাচাই করতে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল। এই বিশাল সংখ্যক ব্যালট সম্পূর্ণভাবে প্রক্রিয়াকরণের জন্য যথেষ্ট সময় প্রয়োজন ছিল। নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও উদ্ভাবন গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা পরিচালক ক্রিস মান নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘনিষ্ঠতাকেও নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় বিলম্বের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। ২০২০ সালে বাইডেন প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য মাত্র এক শতাংশ পয়েন্টের ব্যবধানে জয়ী হন।
এবারও নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে সংবাদমাধ্যমের জন্য ফলাফল ঘোষণা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। মান বলেন, যদি নির্বাচনের ফলাফল অত্যন্ত সংকীর্ণ হয়, তবে চূড়ান্ত ফলাফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে।