দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করে ক্যাটাগরি পাঁচ ঝড়ে পরিণত হয়েছে হারিকেন মিলটন। এটি প্রবল বেগে যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরীয় উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে বলে দেশটির জাতীয় হারিকেন কেন্দ্র (এনএইচসি) জানিয়েছে। মিলটনের বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৭৫ মাইল (২৮১ কিলোমিটার) রেকর্ড করা হয়েছে। এটি ফ্লোরিডার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাত বা বৃহস্পতিবার সকালে এটি আঘাত হানতে পারে বলে এনএইচসি ধারণা করছে। খবর বিবিসি।
ফ্লোরিডার জনগণকে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় উদ্ধার প্রচেষ্টার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে সতর্ক করেছেন গভর্নর রন ডি স্যান্টিস। গতকাল সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের ধরে নিতে হবে এটি হতে যাচ্ছে এক দানবীয় ঝড়।
২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনার পর যুক্তরাষ্ট্রের স্থলভাগে আঘাত হানা সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঝড় হারিকেন হেলেনের তাণ্ডবচিহ্ন এখনো মুছে যায়নি যুক্তরাষ্ট্রে। মাত্র ১০ দিন আগে আঘাত হানা হেলেন দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রে ২২৫ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটায় এবং শতাধিক মানুষ এখনো নিখোঁজ। শুধু ফ্লোরিডাতেই অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আর এরকম সময়েই আঘাত হানতে উদ্যত হারিকেন মিলটন। রাজ্যটির ৬৭টি কাউন্টির মধ্যে ৫১টি এখন জরুরি সতর্কবার্তার অধীনে রয়েছে। বাসিন্দাদের ঝড়ের প্রস্তুতি নিতে এবং দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য সতর্কবার্তা মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন রন ডিস্যান্টিস। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, হেলেনে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলোর অবস্থান মিলটনের পথেই। এই ঝড়ের শক্তি এবং কোথায় এটি আঘাত হানতে পারে, সেই বিবেচনায় আমি মনে করি এটি আরও প্রাণঘাতী হতে যাচ্ছে।
জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবার (এনডব্লিউএস) পরিচালক কেন গ্রাহাম বলেছেন, রেকর্ড ভাঙা গতিতে ক্যাটাগরি পাঁচ হারিকেনে পরিণত হয়েছে মিলটন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮০ নট (১৪৮ কিমি/ঘণ্টা) বেগে বাতাসের গতি বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ডে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ।
হারিকেনগুলোকে তাদের বাতাসের গতির ওপর ভিত্তি করে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত হয়। যেগুলো ক্যাটাগরি তিন বা তার বেশি পৌঁছায়, সেগুলোকে বড় হারিকেন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ সেগুলো উল্লেখযোগ্য প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি করে বলে জানিয়েছে এনডব্লিউএস।
সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, হারিকেন মিলটন আজ মঙ্গলবার উপসাগরীয় মেক্সিকো অতিক্রম করার সময় দুর্বল হয়ে ক্যাটাগরি তিন ঝড়ে পরিণত হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে এবং বুধবার সন্ধ্যা বা বৃহস্পতিবারের শুরুতে ফ্লোরিডার ট্যাম্পা উপসাগরে আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিলটন তারপর উত্তর-পূর্ব দিকে চলতে থাকবে এবং ফ্লোরিডা উপদ্বীপ পেরিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে এগিয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
এনএইচসি সতর্ক করেছে যে, ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলের কিছু অংশে মঙ্গলবার গভীর রাত বা বুধবার সকালের মধ্যে প্রাণঘাতী ঝড়ের ঢেউ এবং শক্তিশালী বাতাস দেখা যেতে পারে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্থানীয়ভাবে ১৫ ইঞ্চি (৩৮ সেন্টিমিটার) পর্যন্ত হতে পারে এবং উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ের ঢেউ ৫-১০ ফুট (১.৫-৩.৫ মিটার) হতে পারে।