মার্কিন নির্বাচনে অপতথ্য বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ইলন মাস্ক এবং সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্স। অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেট-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইলন মাস্কের মার্কিন নির্বাচনের সম্পর্কে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর দাবিগুলো চলতি বছর এক্স প্ল্যাটফর্মে প্রায় ২০০ কোটি বার দেখা হয়েছে। খবর রয়টার্স।
নির্বাচন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের সংস্থাটির মতে, গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোর বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোয় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে এক্স প্ল্যাটফর্ম। এক্সের একজন মুখপাত্র বলেন, কোম্পানির কমিউনিটি নোটস নামক ফিচার ব্যবহারকারীদের পোস্টে অতিরিক্ত ‘কনটেক্সট’ যোগ করতে দেয়। যা সাধারণ সতর্কীকরণ চিহ্নের তুলনায় বিভ্রান্তিকর কন্টেন্ট চিহ্নিত করতে মানুষকে আরো কার্যকরভাবে সহায়তা করে।
টুইটারের মালিকানা নেয়ার পর থেকে মাস্ক কনটেন্ট মডারেশন কমিয়ে দিয়েছেন এবং হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছেন। তিনি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে তার পক্ষে প্রচারণাতেও যোগ দিয়েছেন।
কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিশেষজ্ঞ ক্যাথলিন কার্লি বলেন, এক্সে মাস্কের প্রায় ২০৩ মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক ফলোয়ারের মাধ্যমে মাস্কের যেকোনো পোস্ট ব্যাপক হারে ছড়িয়ে যাওয়ার প্রভাবে এক্সের কন্টেন্ট অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম এবং মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম, যেমন রেডিট এবং টেলিগ্রামেও পৌঁছে যায়। তিনি বলেন, এক্স একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আরেক প্ল্যাটফর্মে তথ্য পৌঁছানোর মাধ্যম।
সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বছরে মাস্কের অন্তত ৮৭টি পোস্ট মার্কিন নির্বাচনের বিষয়ে এমন দাবি করেছে, যা ফ্যাক্ট চেকাররা মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর বলে চিহ্নিত করেছেন। এসব পোস্ট প্রায় ২০০ কোটি বার দেখা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটের অন্যতম পেনসিলভানিয়ায় কিছু এক্স ব্যবহারকারী সম্প্রতি কিছু অসম্পূর্ণ ভোটার নিবন্ধন ফরমের ছবি প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে তারা স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করেছেন। পেনসিলভানিয়া প্রশাসন এ ঘটনাকে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের উদাহরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দায়িত্বশীল সরকার ও ভোটাধিকার প্রচারে কাজ করা সংস্থা কমন কজের পেনসিলভানিয়ার নির্বাহী পরিচালক ফিলিপ হেনসলে-রবিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, কিছু এক্স অ্যাকাউন্ট এমন ধারণা দেয় যে, সেখানে ভোট জালিয়াতি হয়েছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে আমাদের জানা আছে যে, সব কাউন্টির নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রশাসকরা নিয়ম মেনে চলেছেন এবং শুধুমাত্র যোগ্য ভোটাররাই ভোট দিচ্ছেন।
এআই ব্যবহার করে অনলাইনে বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত করা সংস্থা সাইব্রা সোমবার জানায়, এক্সের ১ লাখ ১৭ হাজার ফলোয়ারের একটি অ্যাকাউন্ট ভুয়া একটি ভিডিও ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সেই ভিডিওতে দাবি করা হয়েছিল যে, পেনসিলভানিয়াতে ট্রাম্পের জন্য পাঠানো মেল-ইন ব্যালট ধ্বংস করা হচ্ছে।
এক্সের মুখপাত্র বলেছেন যে, প্ল্যাটফর্মটি এই ভিডিও শেয়ার করা অনেক অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।