রাশিয়ার কাছে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন সরবরাহের অভিযোগে ইরানের ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং জাতীয় এয়ারলাইনের মতো প্রতিষ্ঠানসহ এক ডজনেরও বেশি ব্যক্তি এবং সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) ইউরোপীয় কাউন্সিল জানায়, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য মস্কোর কাছে অস্ত্র এবং সরঞ্জাম সরবরাহের সঙ্গে জড়িত ইরানের মোট সাতজন ব্যক্তি এবং সমান সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
যাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন— ইরানের ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সেয়েদ হামজেহ ঘালান্দারি, ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের কয়েকজন উচ্চপদস্থ সদস্য এবং ইরান এয়ারসহ তিনটি ইরানি এয়ারলাইন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ভন ডার লেয়েন এক্সে এক পোস্টে বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসনের যুদ্ধে ইরানের সমর্থন গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তাই রাশিয়ার কাছে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হস্তান্তরের প্রতিক্রিয়ায় ব্যক্তিবর্গ এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমাদের নিষেধাজ্ঞা গ্রহণকে আমি স্বাগত জানাই। আরো পদক্ষেপ প্রয়োজন।
তেহরান রাশিয়ার কাছে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘায়ি। নিষেধাজ্ঞাগুলোকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলেও নিন্দা জানান তিনি। বাঘায়ি বলেন, কিছু ইউরোপীয় দেশ এবং যুক্তরাজ্য দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেছে যে, ইরান এই সংঘাতে সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছে, যা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করা হল।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে, তাদের কাছে এমন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যা ইঙ্গিত দেয় ইরান রাশিয়াকে ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান সে সময় বলেছিলেন, তার প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তেহরান রাশিয়াকে কোনো অস্ত্র সরবরাহ করেনি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, অতীতে একবার রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ ঘটে থাকতে পারে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে হাঙ্গেরি ছাড়া ইইউয়ের অন্যান্য সদস্য দেশগুলো ইউক্রেনকে প্রায় ১১৮ বিলিয়ন ইউরো (১২৯ বিলিয়ন ডলার) সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে।